হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা বেঁচে যাওয়ারা সাতক্ষীরায় তাই সাক্ষ্য মিলছে না
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: কক্সবাজারে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য এখনও প্রত্যক্ষ সাক্ষী মিলছে না। প্রত্যক্ষ সাক্ষী হিসাবে হেলিকপ্টারের পাইলট উইং কমান্ডার শফিকুল ইসলামের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি যেহেতু এখানে একটি পক্ষ তাই নিরপেক্ষ সাক্ষী খুঁজছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এই ধরনের সাক্ষী রয়েছেন হেলিকপ্টারের ভ্রমণ করা আরও তিনজন। যারা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কক্সবাজার থেকে ঢাকায় চলে আসেন। তদন্ত কমিটি তাদের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু পারছে না। কারণ এখন তারা ঢাকায় নয়, সাতক্ষীরায় আছেন।
তদন্ত কমিটির সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য প্রয়োজন প্রত্যক্ষ সাক্ষী। তারাই বলতে পারবেন ঘটনার সময় ও আগে পরে ঠিক কি হয়েছিল। হেলিকপ্টারটি উপরে উঠার পর ঠিক কী কারণে নীচে পড়ে গেছে। তাদের চোখে এমন কোনো বিষয় পড়েছিল কিনা, যাতে মনে হয়েছিল দুর্ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। কিংবা কোনো অস্বাভাবিক কিছু ছিল কিনা।
সূত্র জানায়, হেলিকপ্টারের আরোহী তিনজনের সাক্ষ্য পেলে কাজটা করা অনেক সহজ হয়ে যেতো। এর বাইরে বিভিন্ন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে সাকিব আল হাসানের বক্তব্য নেওয়া হবে। ঘটনাটি যেহেতু তাকে নামিয়ে দেওয়ার পর ঘটেছে। এই কারণে তারা আগেই সাকিব আল হাসানকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে না।
ইতোমধ্যে সিভিল এভিয়েশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বশীল একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তার সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি ঘটনার ব্যাপারে তার কাছে জানতে চেয়েছেন। সাকিব আল হাসান তেমন কোনো তথ্য দিতে পারেননি। কারণ সাকিব আল হাসান ঘটনার কথা জানতে পেরেছেন দুই ঘণ্টা পর।
এই ব্যাপারে সিভিল এভিয়েশনের ওই সূত্র জানায়, সাকিব আল হাসানকে হেলিকপ্টার থেকে নামানোর পর তিনি শুটিংয়ে চলে যান। তিনি কাজে ব্যস্ত ছিলেন। পরে তাকে খবর দেওয়া হয়েছে। তবে সাকিব আল হাসান নিজে অক্ষত থাকায় আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আদায় করেছেন। ওই কর্মকর্তাকে বলেছেন, আমি ভাল আছি। আল্লাহর অশেষ রহমত।
সূত্র জানায়, ওই হেলিকপ্টারে পাইলট ছাড়াও আরও চারজন যাত্রী ছিলেন। এরমধ্যে একজন মারা গেছেন। বাকি তিনজন জীবিত। তদন্ত কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য ওই তিনজনের সাক্ষ্য নেওয়া জরুরি। তদন্ত কমিটি চেষ্টা করছে ওই সব সাক্ষীকে ঢাকায় ডেকে পাঠানোর। তাদেরকে বেশ কয়েকটি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে ওই সাক্ষীদের ডাকার জন্য তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, দুর্ঘটনার সময় যারা এর আশপাশে ছিলেন তাদেরও সাক্ষ্য নেবেন তদন্ত কর্মকর্তারা। ঘটনার দিন সিভিল এভিয়েশন অথরিটির দুই জন সদস্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ও সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন। ওই সময় আশপাশে যারা উপস্থিত ছিলেন এরমধ্যে কয়েকজন হেলিকপ্টারটি উড়ার সময় দেখেছেন এবং দুর্ঘটনার সময় ও পরে যেতে দেখেছেন। এই ধরনের কয়েকজনের বক্তব্য নেয়া হয়েছে। কক্সবাজারের যারা ওই সময় তদন্ত কমিটির কাছে বক্তব্য দেন তাদেরকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সেই জন্য তাদেরকে ঢাকায় ডেকে পাঠানো হবে। কবে নাগাদ জানতে চাইলে সূত্র জানায়, শিগগিরই করা হবে। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম