রিজার্ভ চুরিতে অভিযুক্ত বিদেশিসহ ১০ ব্যাংক কর্মকর্তা চার্জশিট এ মাসেই দেওয়া হতে পারে
বিশ্বজিৎ দত্ত : বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলায় আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে চলেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০ কর্মকর্তা। অভিযুক্তরা ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং, আইটি, পেমেন্ট সিস্টেম, ফরেন রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্টের কর্মকর্তা। এটা চুরি না কি নিতান্তই অদক্ষতার পরিণামÑ তা স্পষ্ট নয়।
আইটি নিরাপত্তায় অদক্ষতা, গাফিলতি, অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিচারে উদ্দেশ্যটা পরিষ্কার হবে। সুইফট সার্ভারের তিন কর্মকর্তাও অপরাধে জড়িয়েছেন। তাদের সহায়তা ছাড়া হ্যাক করে ডলার পাচার সম্ভব ছিল না। ডলার যেসব সংস্থার হাতে পড়েছে তারাও চিহ্নিত। ফিলিপাইনের ব্যাংক আরসিবিসি, মানি লন্ডারিং প্রতিষ্ঠান ফিলরেম, ইস্টার্ন হাওয়াই লেইসার ক্যাসিনো, ব্লুমবেরি হোটেল, শ্রীলঙ্কার সালিকা ফাউন্ডেশন তদন্তের জালে।
অর্থ চুরিতে ৭০টি পেমেন্ট অর্ডার দেওয়া হয়েছিল। প্রথম অর্ডারটা যায় শ্রীলঙ্কায়। সেই অর্থ ফেরতও এসেছে। হ্যাকার, মানি লন্ডার, নেগোশিয়েটর ইনসাইডার। ইনসাইডার তারাই যারা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভেতরে বসে হ্যাকারদের সার্ভারে ঢোকার সুযোগ করে দিয়েছে। ব্যাংক কর্তারা ছাড়া সেটা কারা পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আট তলার বিশেষ ঘর থেকে সুইফটের মাধ্যমে লেনদেন করা হয়। ব্যাংকের আট কর্তার কাছে সুইফট আইডি থাকে। তারাই শুধু সুইফট সার্ভার ব্যবহার করতে পারেন। লোকাল সার্ভার, সুইফটের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কথা ব্যাংক থেকেই হ্যাকারদের জানানো হয়েছিল। সুইফট স্মার্টকার্ড কোনোভাবেই ভল্টের বাইরে রাখা যায় না। পেমেন্টের পরও সেটা বাইরে ছিল।
সুইফট সার্ভার, লোকাল ইন্টারনেটের সঙ্গে যারা যুক্ত করেছে তারাই আসামি। এক বছর আগে সব বেসরকারি ব্যাংক সুইফট নেটওয়ার্কের সঙ্গে রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) ব্যবহারের সুযোগ পায়। মাত্র তিনটি ব্যাংক সেটা কাজে লাগায় ৪ ফেব্রুয়ারি। সেদিনই চুরির ঘটনা ঘটে। বিদেশি অপরাধীর তালিকায় জাপানের সাসাকিম তাকাশি ও জয়দেবা। আরসিবিসির জুপিটার শাখার মায়া সান্তোস দেগুইতো, ফিলিপিনের ক্যাসিনো ইস্টার্ন হওয়াই লেইসার কোম্পানির মালিক কিম অং, ফিলরিমের প্রেসিডেন্ট বাতিস্তা, ফিলিপাইনের ব্যবসায়ী উইলিয়াম গো, সোসালিকা ফাউন্ডেশনের ছয় পরিচালকÑ গামাজ সালিতা পেরেরা, সানজেবা টিসা বান্দারা, শিরানি ধার্মিকা ফানান্দো, ডন প্রসাদ রোহিতা, নিশান্থা নালাকা ও ওয়ালাকুরুয়ারাচ্চি। চার্জশিটে তাদের নাম থাকবে। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী