ফেসবুকে বাংলাদেশ…
চমকে উঠলেন কেন ভাই?
পিনাকী ভট্টাচার্য্য, চিকিৎসক ও কলামিস্ট
নার্গিস আর রাজ কাপুরের একটা সিনেমা ছিল শ্রী ৪২০। সেখানে একটা মজার গান ছিল। সেই গানের লিরিকটা এই রকম; মেরা জুতা হ্যায় জাপানী, ইয়ে পাতলুন ইংলিশস্তানি, সার পে লাল টোপি রুশী ফির ভি দিল হ্যায় হিন্দুস্তানি।
এই গানটা বাংলাদেশের বাম স্যেকুলার, বাঙালি জাতীয়তাবাদীরা তাদের সংঘ সংগীত হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। এদের গায়ে যেই জামা-ই থাকুক না কেন, মুখে যেই জবানই থাকুক না কেন, বুকের ভেতরে খুলে দেখবেন এদের দিল ভি হিন্দুস্তানি। ওয়াট হিন্দুস্তান থিঙ্কস টুডে বাংলাদেশি স্যেকুলারস উইল ফলো ইট টুমোরো।
মোদি চিক্কুর দিল বেলুচিস্তান কইয়্যা, আর এরা এইখানে ফেবুতে বেলুচিস্তান বেলুচিস্তান কইয়্যা হুক্কা হুয়া করতেছে। এদের সুবাদেই জানলাম, বেলুচরা নাকি মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন দিয়েছিল, আরিব্বাস, এতদিন শুনলাম পাকিস্তানের কোনো নাগরিক বাংলাদেশকে দেখতে পারে না। বেলুচরা নাকি দয়ালু। তা ভাই ২৫ মার্চ রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর ইপিআরে কারা গণহত্যা চালিয়েছিল? বেলুচ রেজিমেন্ট তো? আরেকটা তত্ত্ব হচ্ছে, বেলুচ রেজিমেন্টে শুধু বেলুচরাই নাই অন্য এথিনিক গ্রুপও আছে। মরে যাই মরে যাই। তাহলে আপনাদের গুরু হুমায়ুন আজাদের কী হবে? তিনি য বলেছিলেন, ‘পাকিস্তানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা গোলাপ নিয়ে আসে, তখনও’। এখন যদি কেউ বলে, ‘পাকিস্তানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা স্বাধীনতার দাবি নিয়ে আসে, তখনও’। তাহলে কী হপে? যাই হোক, আমি বেলুচদের ন্যায়সঙ্গত লড়াইয়ের সাথে আছি, আছি কাশ্মীরিদের লড়াইয়ের সাথেও। আহারে, চমকে উঠলেন কেন ভাই? কাশ্মীর শুনে দিলে ব্যাথা লাগলো? আহারে, বেচারা, বেচারা।
কত ত্যাগ-ই না স্বীকার করে মা
সাহেদ আলম, নিউইয়র্ক প্রবাসী সাংবাদিক
মা কহিল, পুত্র তোমার কোনো ইচ্ছা আছে? পুত্রের ইচ্ছার তো কমতি নেই, তবে সব তো আর বলা যাবে না। তবে মায়ের অফিসের টেবিলে, দেয়ালে থরে থরে সাজানো লাল, নীল রঙ নানা চোখ ধাধানো পুরস্কার আর পদক দেখে মনে মনে ভাবে, ইস, আমিও যদি পেতাম এমন কোনো একখানি! কিন্তু মুখ ফুটে বলে না পুত্র। শুধু, বড় বড় নিঃশ্বাস নেয়।
মায়ের মনতো, সবই বুঝে। মা ভাবে, কিভাবে পুত্রের ভারি চেহারায় একটু লাজুক হাসি দেখা যায়। পুরস্কার নিয়ে আক্ষেপ, সে তো আর যেনতেন নয়। মা ঠিক করিল, সামনেই তো শহরে যাবার দিন। ডিসি সাহেবের আমন্ত্রণে ‘মেম্বার সম্মেলন’। নারী ও শিশুদের মন নিয়ে কাজ করা ওই কি জানি নাম এনজিওটার!, ওরা তো আমার ইউনিয়নেই কাজ করিতে আগ্রহী। তাদের কাজটা এমনি এমনি না দিয়ে, অন্তত একটা পদক চাইলে মন্দ বা কি আর হবে, নিজের জন্য তো কিছুই চাইনি, এ জীবনে। অবশেষে এলো সেই মহেন্দ্র ক্ষণ। পুত্রকে একখান পদক দেওয়া হলো ‘স্পেশাল শিশু’ হিসেবে! পদক তো, তাই যে নামেই হোক না কেন, সমস্যা নেই। কারা দিল, সেটাও সমস্যা না। খোকা পদক নিতে গিয়ে আহলাদে আটখানা। কি লাজুক সোনামণিটার চেহারা। বুকের মানিক, তোমার হাসিই মায়ের খুশি। এজন্যই বলা হয়, মা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি। সন্তানের এক টুকরো হাসির জন্য কত ত্যাগ-ই না স্বীকার করে মা।
বাংলাদেশ কী করছে?
আরিফ জেবতিক, সাংবাদিক ও লেখক
বাংলাদেশ থেকে যেসব অথর্বদেরকে পুনর্বাসনের নামে বিভিন্ন দুতাবাসের উচ্চপদে পাঠানো হয়, (তাদের কয়েকজনের ভিডিও মাঝে মাঝে অনলাইনে নির্মল বিনোদন দেয়, খুঁজে দেখতে পারেন) তারা দেশের যে সুনাম বয়ে আনে তা বলাই বাহুল্য।
ফিলিপাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত জেমস গোমেজের তুঘলকি কর্মকা-ে সেদেশের প্রেসে যখন ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার জন্ম দেয়, (এসব কা-ের খবর অবশ্য আপনি আমাদের দেশের মিডিয়ায় পাবেন না) তখন সম্প্রতি মনে মনে তাকে সরিয়ে সেখানে ক্যারিয়ার ডিপ্লোমেটকে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ওই সময়ে সেখানের পত্রপত্রিকায় যে আলোচনা খুব অবাক হয়ে তারা করেছে, সেটি হচ্ছে বাংলাদেশের টাকা চুরি হয়েছে, বাংলাদেশ কী করছে? আমরা জানি, আমরা মোটামুটি পুরোটাই ধামাচাপা দিতে সমর্থ হয়েছি। বাংলাদেশের টাকা চুরি নিয়ে ফিলিপাইনে কংগ্রেস হিয়ারিং হয়েছে, গ্রেপ্তার হয়েছে, নানা ধরনের তদন্ত এখনও জোরেশোরে চলছে। বাংলাদেশের সোকল্ড তদন্ত শেষ হয়েছে কিনা সেটা আমার নজরে আসেনি। তবে কোনো গ্রেপ্তার নেই এবং সেরকম কোনো ইচ্ছা আছে বলে আমি বিশ্বাস করি না।
যাই হোক, ফিলিপাইন থেকে কিছু টাকা ফেরত আসবে শুনে আমরা সবাই নিশ্চয়ই আনন্দিত। আমি শুধু বিনয়ের সঙ্গে মাননীয় অর্থমন্ত্রীর কাছ থেকে এই নিশ্চয়তা চাই যে অন্তত ফেরত আসা টাকাগুলো দেশের কাজে লাগবে। যে চুরির বিশাল ফানেল আমাদের ব্যাংক সেক্টরে বিরাজমান, মাননীয় অর্থমন্ত্রী যদি, ‘এই সামান্য,’ ১২০ কোটি টাকা সেই ফানেলেই ঢেলে দেওয়া রোধ না করতে পারেন, তাহলে এই অল্প কয়টি টাকা উদ্ধার হওয়ায় আমাদের আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই।