পরিচর্যা ও দেখভাল করার তেমন কেউ নেই
ইকবাল হাবীব
সম্প্রতি দেশে একের পর এক পোশাক কারখানায় অগ্নিকা- ও বিস্ফোরণের যে ঘটনা ঘটছে, সেটা উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রানা প্লাজার ঘটনা থেকে শুরু করে তাজরিন ফ্যাশনÑ খুব সম্প্রতি গাজীপুরের টঙ্গীতে টাম্পাকো কারখানায় অগ্নিকা- ও বিস্ফোরণ সকলকে ভাবিয়ে তুলছে।
কারখানা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে। কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে তা প্রতিরোধে অভিযুক্তদের শাস্তি প্রদানেও আইন আছে। কিন্তু এ আইনগুলো প্রতিপালিত হচ্ছে কিনা, নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে তার সঠিক সার্টিফিকেশন কেউ করে কিনা সন্দেহ। যেটাকে আমরা বলি কম্পøায়েন্স ডাটা। আমাদের যে কম্পøায়েন্স কমিশন আছে, সেই কম্পøায়েন্স নিশ্চিত করার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ না থাকার কারণে এসব দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। কারণ, এ বিষয়গুলো আমরা কাগজে-কলমে রাখি, কিন্তু বাস্তবে রাখি না। আমরা যদি, কম্পøায়েন্স নিশ্চিত করতে পারতাম তাহলে গার্মেন্টস সেক্টরে দুর্ঘটনার মাত্রা কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে থাকত।
ফায়ারব্রিগেডের আইনে বলা আছে, আগুন নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রপাতি গার্মেন্টস সেক্টরে রাখতে হবে, কিন্তু সেগুলো রাখা আছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখে নিশ্চিত হয়ে তার সার্টিফিকেশন করা সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। শুধু রাখলেই হবে না, তার পাশাপাশি বিভিন্ন সময় আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য মহড়ারও ব্যবস্থা করতে হবে এবং যারা এ যন্ত্রগুলো ব্যবহার করবে তাদের প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করতে হবে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের কর্মক্ষম রাখা যাতে তারা যথাসময়ে তৎপরতার সঙ্গে কাজ করতে পারে। সেটাও পরিচর্যা করা ও দেখভাল করার তেমন কেউ নেই। তার থেকেও বড় ব্যাপার হচ্ছে, যারা এই ভবনগুলো ব্যবহার করে তারা তাদের ব্যবহার্য জিনিসগুলোর পরিবর্তন করে, যেমন টাম্পাকোর দুর্ঘটনার পর জানা গেল, শুধু তাদের বয়লারের কারণেই নয়, সেখানে দাজ্য পদার্থ থাকার কারণেও অগ্নিকা-ের মতো দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। গোডাউনে সংরক্ষিত দাজ্য পদার্থ বেশি থাকার কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। যারা এরকম কারখানায় কাজ করে শ্রমিক ও মালিক রয়েছেন তাদের অবহিত করণের মতো সুস্পষ্ট ধারণা বা সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। আমার মনে হয়, এসব কাজ না হওয়ার কারণেই বারবার এরকমের দুর্ঘটনা বারবার ঘটছে।
ইতোমধ্যে যেসব কারখানাগুলোকে বিদেশিদের চাপে পড়ে কম্পøায়েন্স-এর আওতায় নেওয়া হয়েছে। সেসব কারখানাতে এধরনের দুর্ঘটনা প্রায় মুক্ত বলা চলে। কিন্তু সরকারের উদ্যোগ না থাকাতে এ কম্পøায়েন্স চেক করাটা শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। তবেই হয়তো আগামীতে অগ্নিকা- ও বিস্ফোরণের মতো ঘটনা কমতে শুরু করবে।
পরিচিতি: স্থপতি
মতামত গ্রহণ: শরিফুল ইসলাম
সম্পাদনা: আশিক রহমান