অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও প্রভাব পড়বে
আনু মুহাম্মদ
ফি মওকুফের মাধ্যমে সম্প্রতি ভারত তার পণ্য এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে আনা-নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের কাছ থেকে যে ট্রানজিট সুবিধা গ্রহণ করছে, সেখানে ভারতের সুবিধাই বেশি পরিমাণে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে ভারত সরকার যেন কম খরচে তাদের পণ্যসামগ্রী পরিবহন করে আসাম থেকে ত্রিপুরায় নিয়ে যেতে পারে। এ ট্রানজিট সুবিধা থেকে বাংলাদেশ তেমন কোনো সুবিধা পাবে না। এ ট্রানজিট সুবিধার মূল উদ্দেশ্যই হলোÑ ভারতের পণ্য পরিবহন যাতে সুবিধা পায়। কম সময়ে, কম খরচে, কম কষ্টে ও কম বিনিয়োগের সুবিধায় পণ্য পরিবহন করতে পারে। ভারতের এ সুবিধায় বাংলাদেশের ট্রানজিট ফি এখানে প্রাসঙ্গিকই নয়।
প্রতিদিন গড়ে ১৬০টি ট্রাক আসা-যাওয়ার ফলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে বিশেষ প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি ভারতের যে ট্রাকগুলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ সুবিধা ব্যবহার করবে, তার ফলে রাস্তার ক্ষতিসাধন হবে এবং বিভিন্ন পরিবহন ব্যবস্থাও ব্যহত হবে। যেহেতু, ভারতের সঙ্গে এ চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে, সেহেতু ভারতের যে পরিবহন থাকবে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে সবসময়। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের পরিবহন যদি চলাচলে স্থগিতও রাখতে হয় তবে তা রাখা হতে পারে। চুক্তির মাধ্যমে তাদের পরিবহনে অগ্রাধিকার তো দিতেই হবে। এর ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ পণ্য পরিবহন, গণ-পরিবহন যাতায়াতে বিঘœ ঘটবে এবং বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হবে, যার প্রভাব অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও পড়বে।
বাংলাদেশের লাভের বিষয়টি চিন্তা করে এ ট্রানজিট চুক্তি করা হয়নি বলে আমি মনে করি। ভারতের লাভের দিকে তাকিয়েই এ ট্রানজিট চুক্তি করা হয়েছে। তারা যাতে তাদের পণ্যসামগ্রী খুব সহজে স্থানান্তর করতে পারে তার দিকে বেশি খেয়াল রাখা হয়েছে এ চুক্তিতে। কয়েক দশক থেকেই হচ্ছে, ভারতের দাবি-দাওয়া কিংবা কর্মতৎপরতা ভারত ও আঞ্চলিক যেসব প্রতিষ্ঠান আছে তাদের সবারই এ বিষয়ে বক্তব্য ছিল, তাদের কর্মসূচিও ছিল। সেই আলোকে এ ট্রানজিট চুক্তি করা হয়েছে যার মধ্যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সকল কিছুই বিদ্যমান।
পরিচিতি: অর্থনীতিবিদ
মতামত গ্রহণ: শরিফুল ইসলাম
সম্পাদনা: আশিক রহমান