ভারতে বিশ্বব্যাংকের নতুন কান্ট্রি ডিরেক্টর বাংলাদেশের জুনায়েদ
আল-আমীন আনাম: ভারতে বিশ্বব্যাংকের নতুন কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের ড. জুনায়েদ কামাল আহমদ। তিনি দেশটিতে বিশ্বব্যাংকের সাবেক কান্ট্রি ডিরেক্টর অন্ন রুহলের স্থলাভিষিক্ত হলেন। এরইমধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেছেন জুনায়েদ।
সম্প্রতি কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে অন্ন রুহলের চার বছর মেয়াদ শেষ হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, জুনায়েদ আহমদ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। এর আগে তিনি বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম অং কিমের চিফ অব স্টাফের দায়িত্ব পালন করেন। আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, ভারত এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্বব্যাংকের বিভিন্ন কর্মসূচির প্রধান হিসেবেও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি।
সাবেক সচিব ও কূটনীতিক মোসলেহ উদ্দিনের ছেলে জুনায়েদ কামাল। তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথের প্রতিষ্ঠাতা বোর্ড সদস্য।
জুনায়েদ কামালের নিয়োগের খবর বিশ্বব্যাংক ওয়েবসাইটে প্রকাশ হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেধাবী এই বাংলাদেশির বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। ভারতের সংবাদ মাধ্যমেও ফলাও করে তার নিয়োগের খবর প্রকাশিত হয়।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম অং কিম বলেছেন, ‘আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি, জুনায়েদ আহমদকে ভারতে বিশ্বব্যাংকের নতুন কান্ট্রি ডিরেক্টর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ভারতের সাম্প্রতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন আমাদের সময়ের অন্যতম অর্জন’।
দক্ষিণ এশিয়ায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যান্নেত্তি ডিক্সন বলেছেন, সামাজিক উন্নয়ন, নগরায়ন ও পানি সংকটপূর্ণ এলাকায় জুনায়েদের কাজ করার অভিজ্ঞতা ভারতের নিজস্ব উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও বিশ্বব্যাংকের কৌশল বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে।
জুনায়েদ ১৯৯১ সালে বিশ্বব্যাংকে ইয়ং প্রফেশনাল হিসেবে যোগ দেন। এরপর আফ্রিকা ও পূর্ব ইউরোপে অবকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে কাজ করেন তিনি। এরপর বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিষদের বেশকিছু পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ফলিত অর্থনীতি বিষয়ে পিএইচডি, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে লোক প্রশাসনে স্নাতকোত্তর ও ব্রাউন ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রি নেন।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সংস্থাটির সদর দফতরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন জুনায়েদ। মেধাবী এ বাংলাদেশি বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে নীতিনির্ধারণী কর্মকর্তা হিসেবে ছিলেন।
ব্যাংকের ওয়েবসাইটে আরও বলা হয়, ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে যোগ দেওয়ার আগে তিনি ওয়াটার গ্লোবাল প্রাকটিসের সিনিয়র ডিরেক্টর ছিলেন। তার নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী, দক্ষ, বুদ্ধিদীপ্ত, বিশ্লেষণাত্বক, কর্মক্ষম ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বমূলক গ্লোবাল প্রাকটিস তৈরি হয়েছে। জুনায়েদ পানি ব্যবস্থাপনা ও পানি-অর্থনীতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন।
বিশ্বব্যাংক বলছে, ১০ বছর মাঠপর্যায়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে জুনায়েদ আহমেদের। প্রথমদিকে জোহানেসবার্গে বিশ্বব্যাংকের উপ-আবাসিক প্রতিনিধি এবং প্রধান অর্থনীতিবিদ হিসেবে কাজ করেন। তারপর নয়াদিল্লিতে পানি এবং পয়ঃনিষ্কাশন কর্মসূচিতে আঞ্চলিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এছাড়া বিশ্বব্যাংকের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার অবদান রয়েছে।