যুদ্ধ নয়, আন্তর্জাতিকভাবে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করবে ভারত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের লাইন অব কন্ট্রোলের কাছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ঘাঁটিতে ভয়াবহ হামলায় ভারত সরকার পাকিস্তানকে দোষারোপ করে সরাসরি কিছু বলেনি। তবে পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিকভাবে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করতে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। মঙ্গলবার সিনিয়র মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। চ্যানেলআই
সরকারের পক্ষ থেকে সিনিয়র মন্ত্রী রবি শংকর প্রসাদ বলেছেন, ‘পাকিস্তানের কাজকর্ম সহ্যসীমার বাইরে চলে গেছে। ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আর কখনো আগের মতো হবে না।’ পাকিস্তান অস্বীকার করলেও হামলায় এর সম্পৃক্ততার প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। আর ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং হামলার পরই পাকিস্তানকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ বলে আখ্যায়িত করেন। তবে কাশ্মীরের উরি ক্যান্টনমেন্টে ওই হামলায় জড়িত থাকার কথা দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। পাশাপাশি নয়াদিল্লির এমন ‘অপরিপক্ক’ অভিযোগের তীব্র সমালোচনা করে ইসলামাবাদ। বলেছে, জম্মু কাশ্মীরের মানুষদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি ধামাচাপা দিতেই ভারত এ অভিযোগ তুলছে।
ভারত আঘাত করলে পাল্টা প্রতিঘাত করতেও পাকিস্তান প্রস্তুত বলে জানানো হয়েছে।
বুধবারের জাতিসংঘ সাধারণ সম্মেলনের জন্য অনেকদিন আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। উদ্দেশ্য, নিজের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিকে আরেক ধাপ তুলে ধরা এবং ভারত-পাকিস্তানের বিরোধের অন্যতম বিষয় কাশ্মীরে ভারতের সহিংসতায় নিন্দার মাধ্যমে পাকিস্তানকে দৃঢ়ভাবে উপস্থাপন করা।
তবে রোববার ভারত নিয়ন্ত্রণাধীন জম্মু কাশ্মীরে সেনা ঘাঁটিতে জঙ্গিহামলায় ১৭ সেনা সদস্য ও ৪ জঙ্গি নিহত হওয়ার ঘটনায় পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টে গেছে। সোমবার আহত সেনাদের মধ্যে আরেকজন মারা গেলে মৃত সেনার সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮তে।
গত এক দশকে কাশ্মীরে সবচেয়ে ভয়াবহ এ হামলার পর ঘটনাটি শুধু ‘সন্ত্রাসী কর্মকা-’ পরিচয় থেকে রাজনৈতিক দিকে মোড় নিয়েছে। দিল্লির অনেক রাজনৈতিক নেতা এবং সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এর সঙ্গে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতার দাবি করছেন। বলছেন, হামলাকারীদের মদতদাতা হচ্ছে খোদ পাকিস্তান।
এ ঘটনায় পুরো ভারতে শোক ও তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পাকিস্তানকে তীব্র পাল্টা জবাব দেওয়ার জোরালো দাবি জানায় ভারতীয় সেনাবাহিনী।
সোমবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর সামরিক কর্মকা-বিষয়ক ডিরেক্টর অব জেনারেল (ডিজিএমও) জানান, হামলাকারী চার ‘ফিদায়িন’ (আত্মঘাতী মিশন পরিচালনার জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গি)-এর কেউই ভারতীয় নয়। তাদের কিছু সরঞ্জাম পাকিস্তানের বলেও জানিয়েছেন তিনি। ভারত-পাকিস্তানের নতুনভাবে জেগে ওঠা এ দ্বন্দ্ব সম্মুখযুদ্ধ পর্যন্ত গড়ায় কিনা- এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করছেন বিশ্লেষকরা। সম্পাদনা: ইমরুল শাহেদ