নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপি নেতাদের ভাবনা সরকারের পদক্ষেপ হতে হবে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য
শাহানুজ্জামান টিটু: ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ। রয়েছে মাত্র পাঁচমাস। আগামীতে নতুন নির্বাচন কমিশন কেমন হবে- সার্চ কমিটি গঠন প্রক্রিয়া ও সেখানে কাদের সদস্য করা হবে, এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছেন দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির নেতারা।
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে যেমনটি বলেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী। তিনি মনে করেন- স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য সাধারণ নির্বাচনের বিষয়ে সরকারের যদি সত্যিই সদিচ্ছা থাকে, তবে তাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ হবে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা। তারা যদি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলোকে পুনর্বাসন চান। তাহলে তাদের প্রথম পদক্ষেপটি হতে হবে একেবারেই নিরপেক্ষ। আর এখানে যদি তাদের (সরকার) স্খলন ঘটে, এখানে তারা যদি ব্যত্যয় ঘটিয়ে দেন, তাহলে এটা গণতন্ত্রের পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া চালু করার যে প্রচেষ্টা থাকতে পারে, তা বিপাকে পড়ে যাবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর মতে, স্বাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন দেশের সব মানুষেরই দাবি। এটা দেশের সব রাজনৈতিক দল ও সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিসহ সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পুনর্গঠন করতে হবে। বিএনপির এ নেতা বলেন, শুধু নির্বাচন কমিশনকে নয় এর সহযোগী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকেও ঢেলে সাজাতে হবে। এরপরই নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে হবে।
ইনাম আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমাকে যদি আপনি প্রশ্ন করেন নতুন নির্বাচন কমিশন কেমন চাইÑ জবাবে বলব, বর্তমান নির্বাচন কমিশন যেমন আছে, ঠিক তার বিপরীত একটি নির্বাচন কমিশন চাই। কারণ, তারা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। শুধু তাই নয়, নির্বাচন প্রক্রিয়াটাকে এরা কলঙ্কলিপ্ত করে গণতন্ত্রকে অকার্যকর করে তুলেছে। এদের প্রতি কারোরই আস্থা নেই। দেশের কোনো রাজনৈতিক দলের আস্থা নেই। এই ধরনের ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশের ইতিহাসে হয়নি।
বিএনপির এ প্রবীণ নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রথম পদক্ষেপ নেবে সরকার সার্চ কমিটি গঠন করে। সার্চ কমিটিতে দেখতে হবে যারা সদস্য হবেন তারা যেন নিরপেক্ষ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন হন। তারা যেন রাজনৈতিক প্রভাবান্বিত না হন। তারা যেন সৎ ও সাহসী থাকেন। সত্যিকারভাবে এ সার্চ কমিটিই একটা ভালো নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। এতে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে। সব দলের গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন উপহার দিতে পারবে। তারা নিরপেক্ষ, দক্ষ, অভিজ্ঞ ও কারোর প্রভাবে প্রভাবান্বিত হবে না।
বরাবরই বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সব নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দলটি। বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে অযোগ্য মেরুদ-হীন, সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন বলে আখ্যা দিয়েছে। এমনকি এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। বিভিন্ন সময়ে দলটির পক্ষ থেকে বর্তমান নির্বাচন কমিশনেরও পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে।
নেতাদের বক্তব্য অনুযায়ী- স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবিতে বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোটের যে আন্দোলন, তার যথার্থতা প্রমাণ হয়েছে গত জুন মাসে সম্পন্ন হওয়া ইউপি নির্বাচনে। বাংলাদেশে নির্বাচনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি (শতাধিক) ও সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে এ নির্বাচনে। সম্পাদনা: রিকু আমির