পুলিশ ও র্যাবের নখদর্পণে দেশের পুরো জঙ্গিনেটওয়ার্ক
আজাদ হোসেন সুমন: দেশের জঙ্গি নেটওয়ার্ক এখন পুরোপুরি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। আনসার আল ইসলাম, হিজবুত তাহরির, নব্য জেএমবি, তাদের অর্থের যোগান, অস্ত্রের উৎস সবই এখন পুলিশের নখদর্পণে। পুলিশের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানাগেছে।
সূত্রের দাবি শিগগিরই মাস্টারমাইন্ড জঙ্গি মেজর জিয়া, মারজান ও জাহিদুলের স্ত্রী জেবুন্নেসাসহ বাকি জঙ্গি নেতারা ধরা পড়ে যাবে। র্যাব পুলিশসহ ইন্টেলিজেন্স এজেন্সিগুলো দেশের জঙ্গি নেটওয়ার্কে ঢুকে পড়েছে। তদন্ত এবং অভিযান দুটোই পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে একযোগে পরিচালনা করছে। ফলে জঙ্গিরা বাসাবদল করার স্বল্প দিনের মাথায় পুলিশ নিজেদের শক্ত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে জেনে যাচ্ছে এবং অভিযান পরিচালনা করছে।
ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজমের ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, জঙ্গিরা আর সুবিধা করতে পারবে না। তাদের অস্ত্র অর্থের উৎস এবং নেটওয়ার্ক সম্পর্কে আমরা এখন অবগত। সুতরাং জঙ্গিরা যেখানেই আস্তানা করুক না কেন সেটা আমাদের নজরে চলে আসবে। কল্যাণপুর, মিরপুরের রুপনগর, নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়া ও আজিমপুরের আস্তানার আগাম তথ্য না পেলে তারা রাজধানীসহ দেশের যেকোনো স্থানে বড় ধরনের নাশকতার ঘটনা ঘটাতে পারতো।
তথ্যনুসন্ধানে আরও জানা যায়, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান এবং এ সবের নেপথ্য নায়ক এবং বর্তমানে তৎপর যারা তাদের কার কি অবস্থান- সব এখন পুলিশের নেটওয়ার্কে। শুধু বাংলাদেশ নয়-আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীচক্রের সঙ্গে সখ্যতা এবং কিভাবে কোন সংগঠনের সঙ্গে বাংলাদেশের জঙ্গিদের যোগাযোগ সেটাও পুলিশের অজানা নয়। পাশপাশি পাকিস্তান আফগানিস্তানের দুর্গম অঞ্চলে ডেরাগুলো থেকে গত একযুগে কতজন জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিয়েছে। সিরিয়ায় কয়জন বাংলাদেশী জঙ্গি আছে এবং বাংলাদেশের দিকে তাদের নজর আছে এ বিষয়টিও সতর্কতার সঙ্গে লক্ষ্য করছে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা।
সূত্র জানায়, গত ৩ বছরে কমপক্ষে ১শ’ সক্রিয় জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং নিজেদের শক্ত নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করে জঙ্গি নেটওয়ার্ক সম্পর্কে অবগত হয়েছে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশি নেটওয়ার্কের কাছে ধরাশায়ী হয়ে জঙ্গিরা এখন নাশকতার পরিকল্পনা করার পরিবর্তে নিজেরাই দিকবিদিক ছুটোছুটি করছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
এ ব্যাপারে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সাবেক আইজিপি মোদাব্বির হোসেন চৌধুরী বলেন, জঙ্গিদমনে ভূমিকার জন্য পুলিশকে বাহবা দেয়া যেতে পারে। কারণ বিষয়টি হেলাফেলার নয়। এটা অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়। পুলিশ গাফিলতি বা ভুল করলে জঙ্গিরা দেশের বারোটা বাজিয়ে দিতো এনিয়ে কারো সন্দেহ বা দ্বিমত থাকার কথা নয়। তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরকে তাদের এ এচিভমেন্ট ধরে রাখতে হবে। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা অনেক উন্নত দেশও দেশ থেকে এত দ্রুত জঙ্গিবাদ দমন করতে পারেনা। বাংলাদেশ যা করে দেখালো। জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশের পাশপাশি জনগণের অগ্রণী ভূমিকার কথাও তিনি উল্লেখ করে বলেন, বাঙালি বীরের জাতি-তারা জাতীয় প্রয়োজনে বরাবরই মাঠে নামে জঙ্গিবাদ দমনের ক্ষেত্রেও সেটা আরেকবার প্রমাণিত হল। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম