বাংলাদেশে ২৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে ভারত : শ্রীংলা
মমিনুল ইসলাম: বাংলাদেশে বড় বিনিয়োগকারী দেশ প্রতিবেশী ভারত। দেশটি ইতিমধ্যে বিভিন্নখাতে বিনিয়োগ করেছে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়া আরও ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের চিন্তা ভাবনা করছে দেশটি। অন্যদিকে সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে বর্তমানে বিভিন্ন প্রকল্পে আনুমানিক ১১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে ভারত। সূত্র: দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস।
ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা দেশটির বেসরকারি নিউজ সংস্থা আইএএনএস’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী ভারতীয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে মুখেশ আম্বানির রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, টাটা গ্রুপ, অশোক লেল্যান্ড, হিরো মটরকর্প, এয়ারটেল, ম্যারিকো, গোদরেজ, ভিআইপি ইন্ডাস্ট্রিজ, সিট টায়ার্স, অ্যাম্বাত্তুর ক্লোথিং, শাহারা, এল অ্যান্ড টি ও আদানি গ্রুপ প্রসিদ্ধ।
শ্রীংলা বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন ভারতের পাঁচ রাজ্য সফরের অংশ হিসেবে ত্রিপুরা অবস্থানকালে এ কথা জানান। সফরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, মুখ্য সচিব যশপাল সিংহ ও অন্যান্য বিভিন্ন কর্মকর্তা ও বিশিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। এ বৈঠকে ইন্দো-বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন রাষ্ট্রদূত।
শ্রীংলা বলেন, বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ বিপুলসংখ্যক প্রকল্প যৌথভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে এবং কিছু প্রকল্পে অর্থয়ানের প্রক্রিয়া চলছে।
রাষ্ট্রদূত জানান, বর্তমান ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বাৎসরিক বাণিজ্যর পরিমাণ ৬.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এসব চলমান ও প্রস্তাবিত প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে এর পরিমাণ তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পাবে। ভারত বাণিজ্য ও অর্থনীতি জোরদার করতে ইতিমধ্যে আগরতলা ও পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোলে ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্তে দুটি ইন্টিগ্রেটেড পোস্ট (আইসিপি) নির্মাণ করেছে।
তৃতীয়তম আইসিপি মেঘালয়ের দাবকিতে নির্মাণ করা হবে এবং এর জন্য আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানান শ্রীংলা।
এই প্রসঙ্গে ভারতের রাষ্ট্রদূত বলেন, একটি পরীক্ষামূলক পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশ থেকে সম্প্রতি ১,৮৫০ কিলোমিটারের অধিক পথ পাড়ি দিয়ে তিন দিনে দিল্লি পৌঁছেছে। এর ফলে বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান ও নেপাল যে মটরযান চুক্তি সই করেছে, তার উপকার সফলভাবে প্রদর্শিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, গত পাঁচ বছরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক তীব্রভাবে বিকাশিত হয়েছে। বর্তমানে সে সম্পর্ক বিগত ত্রিশ বছরের চেয়ে অনেক ভাল পর্যায়ে রয়েছে। আমাদের অর্থনীতি পুনরায় একীভূতকরণে কাজ করছি। আমাদের বাংলাদেশের সঙ্গে ৪,০৯৬ কিলোমিটারের দীর্ঘতম সীমান্ত রয়েছে। এর সম্ভাব্যতা উপলব্ধি হলে এটা ব্যবহারযোগ্য করা যেতে পারে। আর এটা উপলব্ধি করেই দুদেশই তাদের সীমান্ত অবকাঠামো বিকাশিত করছে।
শ্রীংলা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতীয় শহরগুলোর মধ্যে বাস সেবা বেড়েছে। এরপর আগরতলা-আখাউড়া ও কলকাতা-খুলনা দুই নতুন ইন্দো-বাংলাদেশ রেল সংযোগের উন্নয়ন করা হচ্ছে। ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোকে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে যুক্ত করতে দক্ষিণ ত্রিপুরার ফেনী নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ ও উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোকে স্থলপথে যুক্ত করতে বাংলাদেশের মহাসড়কগুলোর সম্প্রসারণ কাজ আগামী বছরের শুরুর দিকে শুরু হবে।
তিনি জানান, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম, মংলা ও আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করার জন্য ভারতকে প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়াও ভারত আশুগঞ্জ বন্দরের উন্নয়নে সাহায্য করছে। এসব বন্দর স্থলবেস্টিত উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য বৃহত্তর উপকার বয়ে আনবে বলে জানান তিনি। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি