তামিমের মৃত্যুর পর তার দায়িত্ব পালনকারীকে খুঁজছে গোয়েন্দারা
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : জঙ্গি নেতা তামিম চৌধুরী পুলিশের অভিযানে নিহত হওয়ার পর তার দায়িত্বে বর্তমানে কে আছেন, তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।
তারা মনে করছেন তামিম চৌধুরী নিহত হলেও তাদের সব কর্মকা- বন্ধ হয়ে গেছে, এমনটি মনে করার কোনো কারণ নেই। কারণ, তারা আগামী দিনের জন্য বড় পরিসরে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করবে।
জঙ্গি দমনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, তামিম চৌধুরী ও তার সেকেন্ড ম্যান আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহত হন। তার আরও লোকজন বাংলাদেশে কাজ করছে বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে। ইতোমধ্যে একাধিক নামও পাওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, তামিম চৌধুরীদের লক্ষ্য ছিল- বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি হামলা করা। এজন্য তারা বিভিন্ন সোর্সে অর্থও সংগ্রহ করেছিল। তামিমদের কাছে আসা জঙ্গি হামলার ঘটনার জন্য মোটা অংকের একটি চালানও জব্দ করেছে গোয়েন্দারা। ওই অর্থ বিভিন্ন দেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে এসেছিল। কিন্তু হুন্ডি চক্র ওই টাকা তামিম চৌধুরীদের কাছে পৌঁছাতে পারেনি। এর আগেই গোয়েন্দারা তাদেরকে ধরে জব্দ করে ওই অর্থ। এছাড়াও আরও দুটি হুন্ডির চালানও আটক করেছে। এই টাকার অংকটি বড়। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, ওই অর্থের বড় একটি চালান ছিল একটি দেশের ডলার।
সূত্র জানায়, জঙ্গিদের অর্থয়ানের টাকা বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছে। এরমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের একক কোনো দেশের নাম নয় কয়েকটি দেশ রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে আরও কয়েকটি দেশ। দুবাইয়ের নামও এসেছে। তবে এখনও পর্যন্ত তারা বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি।
এখনও জঙ্গি দমনে কর্মরতরা দাবি করছেন না- দেশ থেকে পুরোপুরি নির্মূল হয়েছে। তারা বলছেন, ১ জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলায় ব্যবহার করা আগ্নেয়াস্ত্র বিদেশি। গোয়েন্দারা মনে করছেন- সেগুলো তারা স্থানীয় বাজার থেকে কিনতে পারেন। এর মধ্যে কিছু ধারালো অস্ত্রও রয়েছে। বিশেষ করে- চাপাতি ও ছুরি। এসব অস্ত্র খোলা বাজারে পাওয়া যায় বলে রোধ করা যাচ্ছে না। আবার হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ আসছে বলে সব চালান ধরাও সম্ভব হচ্ছে না। নানাভাবে ফাঁক গলিয়ে তারা অর্থ যোগাড় করতে পারে। সেই ক্ষেত্রে ঝুঁিক রয়ে যাচ্ছে। এছাড়া তামিমদের আদর্শে অনুপ্রাণিত অনেক তরুণও আছে। যারা নতুন ট্রেন্ডের জঙ্গি হিসেবে কাজ করছে আধুনিক পোশাকে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে মিশে থাকছে। তাই তাদেরকে ধরা কঠিন হচ্ছে।
গুলশানের ঘটনার পর বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। কিন্তু সব জঙ্গি নেতাকে ধরা সম্ভব হয়নি। তামিমের মৃত্যুর পর তারা গা ঢাকা দিয়েছে। আবার নতুন করে সংগঠিত হয়ে নতুন কোনো ঘটনা ঘটাতে পারে। এই জন্য বাড়তি সতর্কতাও নেওয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, আমরা বিভিন্ন সোর্সে জানার চেষ্টা করছি তাদের পরবর্তী লক্ষ্য কী, কবে, কখন ও কোথায় তারা কী ধরনের হামলা করার পরিকল্পনা করছে। এই ব্যাপারে একাধিক জঙ্গিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে পরবর্তী হামলার কোনো পরিকল্পনা কেউ জানাতে পারেনি।
সূূত্র জানায়, এই পর্যন্ত তারা যে কটি ঘটনা ঘটিয়েছে, এর সবকটিই করেছে, যেখানে কম নিরাপত্তাব্যবস্থা। আগামীতেও তারা এই ধরনের কোনো স্থাপনা কিংবা কোনো জায়গায় হামলা চালাতে পারে। তবে এবার তারা জনসমাগম বেশি হয় এমন কোনো স্থানে হামলা চালাতে পারে। সেই জন্য সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থান ও জায়গা বিবেচনা করে সতর্কতামূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। সম্পাদনা : রিকু আমির