ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর স্বীকারোক্তি কাশ্মীরি সেনাঘাঁটির নিরাপত্তায় গলদ ছিল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের উরিতে সেনাঘাঁটির নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ফাঁক থাকার কথা স্বীকার করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর। তবে বিষয়টিকে সংবেদনশীল উল্লেখ করে তা নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি। আনন্দবাজার
দিল্লিতে বুধবার এক অনুষ্ঠানে উরি প্রসঙ্গে বলেন, ‘কোথাও তো ভুল-ত্রুটি ছিলই। আমি এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে চাই না। কারণ বিষয়টি সংবেদনশীল।’ তিনি আরও বলেন, ‘যখন কোনও কিছুতে ভুল হয়, তখন সকলেরই লক্ষ্য থাকে, যেন দ্বিতীয়বার সে রকমটা না ঘটে। কোথায় ভুল হয়েছে, তা প্রথমে খুঁজে বের করবো। তারপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো, যেন তার পুনরাবৃত্তি না হয়।’
উরির ঘটনার তদন্তে নেমে শুরু থেকেই গোয়েন্দারা মনে করছেন, অন্তর্ঘাতের কারণেই কার্যত বিনা প্রতিরোধে জঙ্গিরা ভিতরে ঢুকতে পেরেছিল। ঘাঁটিতে থাকে বা যাতায়াত করে এমন কেউ সাহায্য করেছে হামলাকারীদের। সেই সাহায্যকারী কে বা কারা তার খোঁজ চলছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, সেনাঘাঁটির পিছনের দিকে দু’টি জায়গায় লোহার তারজালি কেটে ভিতরে ঢুকেছিল চার হামলাকারী। এর পর কী ভাবে ১৫০ মিটার ভিতরে কোনও বাধা ছাড়াই ঢুকে গেল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সে দিন ঘাঁটিতে ঢুকে নিরাপত্তারক্ষীদের ঘায়েল করে একেবারে বেছে বেছে হামলা চালায় হামলাকারীরা। অফিসারদের মেস ছাড়াও অস্থায়ী তাঁবুতে থাকা সেনারা ছিল মূল নিশানা। যাতে তারা তাঁবুর বাইরে বের হতে না পারেন, সেজন্য পরিকল্পিত ভাবে গ্রেনেড ছুঁড়ে ডিজেল ভা-ারে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে হামলাকারীদের রক্তের নমুনা ও ডিএনএ স্যাম্পল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা গোয়েন্দাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। হামলাকারীদের কাছে থাকা যে সব একে-৪৭ উদ্ধার করা হয়েছে, তা কোন দেশে বানানো সেই ছাপ অনুপস্থিত বলে জানিয়েছে এনআইএ। গোয়েন্দাদের বক্তব্য, ওই ছাপ ঘষে তুলে দেওয়া হয় যাতে পাকিস্তানের দিকে আঙুল তোলা না যায়। তবে হামলাকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া খাবার, ওষুধ, সিরিঞ্জ পাকিস্তানে তৈরি। পঠানকোট, উধমপুর আর উরি এসব হামলায় হামলাকারীরা একই ধরনের কিট ব্যবহার করছে বলে দেখা হচ্ছে বলে তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। হামলাকারীদের যে হ্যান্ডসেটটি পাওয়া গেছে, সেই ধরনের একটি হ্যান্ডসেট গত জুলাই মাসে ধৃত জঙ্গি বাহাদুর আলীর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। যার সঙ্গে লস্কর-ই-তৈয়বার কন্ট্রোল রুম আলফা-থ্রির সরাসরি যোগাযোগ ছিল। এই তথ্যপ্রমাণের বিষয়ে কথা বলতে গতকাল ভারতে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার আবদুল বাসিতকে ডেকে পাঠান পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শঙ্কর। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ