ফেরিঘাটের চাঁদাবাজ ও মহাসড়কে অবৈধ টোল আদায়কারীরা চিহ্নিত: কঠোর ব্যাবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
আনিসুর রহমান তপন : চাঁদাবাজ ও অবৈধ টোল আদায়কারিদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে তাদেরকে এখনই শাস্তির আওতায় না এনে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করা হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত মহাসড়কে অবৈধ টোল ও ফেরিঘাটের চাঁদাবাজি প্রতিরোধে অনুষ্ঠিত সভা শেষে এ কথা বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ফেরিঘাটের চাঁদাবাজ ও মহাসড়কে অবৈধ টোল আদায়কারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই তাদেরকে সতর্ক করে দিচ্ছি যাতে এসব অবৈধ কাজ তারা বন্ধ করেন। নতুবা তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। আমরা তাদের সুযোগ দিচ্ছি, তারা যেনো সংশোধন হন।
তিনি বলেন, অনেকদিন যাবত দেশের ফেরিঘাট ও হাইওয়েতে চাঁদাবাজির অভিযোগ আমরা পাচ্ছিলাম। সেই পরিপ্রেক্ষিতে দেশের গোয়েন্দা সংস্থাকে চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়। গোয়েন্দা সংস্থার সেই তালিকা আমাদের হাতে এসেছে। আমরা প্রথমে এসব চাঁদাবাজদের সতর্ক হওয়ার সুযোগ দেবো। না মানলে আগামীকাল থেকেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান, পুলিশ মহাপরিদর্শক একে এম শহীদুল ইসলাম, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এবং সড়ক পরিবহন সমিতির নেতা ও শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
চাঁদাবাজ ও অবৈধ টোল আদায়কারিদের চিহ্নিত করা হয়েছে, তাহলে শাস্তি না দিয়ে সতর্ক করা হচ্ছে কেন? সরকার কী এসব চাঁদাবাজদের প্রতি দূর্বল? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, না, সরকার দুর্বল নয়, কারও মুখের দিকে তাকিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রশাসন চালান না। কেউ এসে এখানে চাঁদাবাজি করবে, মাস্তানি করবে, তা হবে না, আমরা সেটা বন্ধ করব। কতোদিন তাদের সুযোগ দেওয়া হবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত যে যাই করেছে সেটা বন্ধ করতে হবে। সুযোগ না নিয়ে যদি আবার কালই চাঁদাবাজি শুরু করে তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তালিকায় কাদের নাম এসেছে জানতে চাইলে মন্ত্রী জানান, এখন আমরা তা বলব না। প্রকাশ করলে চাঁদাবাজরা পালিয়ে যেতে পারে।
সরকার দলীয় বা সমর্থকদের নাম এ তালিকায় আছে কিনা? জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমাদের কাছে কিছু লোকের নাম এসেছে। এখন গোয়েন্দা সংস্থার এই তালিকায় যাদের নাম আছে তাদের বিষয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, ডিসি, এসপির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করা হবে, পরে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্ত্রী জানান, কয়েকটি ফেরিঘাটে সিসিটিভি লাগানো হয়েছে। আর যেগুলোতে লাগানো হয়নি, সেগুলোতেও লাগানো হবে। সিরিয়াল ব্রেক ও চাঁদাবাজির চিত্র যেনো দায়িত্বে যারা থাকবেন তারা দেখতে পারেন, সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যাত্রীদের কাছ থেকে যেনো অতিরিক্ত ভাড়া না নিতে পারে সেই প্রচেষ্টাও থাকবে। এ বিষয়ে নৌ-মন্ত্রী, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা সহযোগিতা করবেন। বাড়তি টোল আদায় প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয় নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে পৌরসভার টোল অতিরিক্ত কেউ আদায় করতে পারবে না।
নূর চৌধুরীকে ফেরৎ আনা প্রসঙ্গে অপর এক প্রশ্নে আসাদুজ্জামান খান বলেন, আপনারা যা শুনেছেন আমরাও তা শুনেছি। নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে যতো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব আমরা তা নিয়েছি, একের পর এক উপায়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা তাকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায় রয়েছি। সম্পাদনা: আজাদ হোসেন সুমন