অন্যান্য দেবতাদের মূর্তি বাড়িতে রাখা নিয়ে বিধিনিষেধ নেই, কিন্তু শিবলিঙ্গ নিয়ে রয়েছে। জেনে নিন, হিন্দুরীতি অনুযায়ী ঠিক কী কারণে বাড়িতে শিবলিঙ্গ না রাখাই ভালো।
পবিত্র শিবলিঙ্গ বাড়িতে রাখার বিপদ রয়েছে অনেক।
প্রচলিত একটি ধারণা রয়েছে যে, মহাদেবকে শুধু একটু বেলপাতা দিলেই নাকি তিনি তুষ্ট হন। কিন্তু আদতে মহাদেবকে তুষ্ট করাই সবচেয়ে কঠিন। যুগের পর যুগ ভক্তি ভরে তার তপস্যা করে যেতে হয় মনে কোনো লোভ বা অভিসন্ধি না রেখে। তবেই তিনি একদিন প্রসন্ন হন এবং তারপরে যে বরদান করেন, তাতে জীবনের মোড় ঘুরে যায়Ñ এমন বহু উদাহরণ রয়েছে মহাভারতে এবং অন্যান্য প্রাচীন টেক্সট-এ। কিন্তু বাড়িতে শিবলিঙ্গ রাখার অনেক বিপদ রয়েছেÑ
১. শিবলিঙ্গে প্রাণ-প্রতিষ্ঠা একটি বিরাট জটিল প্রক্রিয়া। যেকোনো পুরোহিত সেটি করতে পারেন না। তাই তেমন কাউকে দিয়ে এই কাজ করাতে গিয়ে যদি কোনো ত্রুটি হয়, তবে বিপদ।
২. প্রাণ-প্রতিষ্ঠা ঠিকঠাক হলেও বেশকিছু অন্য বিপদ রয়েছে। নিত্যপূজা এবং স্নান ঠিকমতো হতে হবে। না হলে দেবতা অসন্তুষ্ট হবেন এবং গৃহস্থকে নানা সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
৩. শিবের অভিষেক করতে হয় পাঁচটি উপকরণ দিয়েÑ ঘি, মধু, দই, দুধ এবং গঙ্গা জল। গঙ্গা যে অঞ্চলে নেই, সেখানে ডাবের জল ব্যবহার করা যায় আবার পঞ্চনদীর জলও ব্যবহৃত হয়। বাণলিঙ্গ না রেখে বাড়িতে অন্য শিবলিঙ্গ রাখলে কিন্তু প্রতিদিন এগুলো দিয়ে অভিষেক করতে হবে, যা সকলের পক্ষে সম্ভব নয়।
৪. বাড়িতে যদি অশৌচ হয়, তবে ঠাকুর ছোঁয়া যায় না প্রচলিত রীতি অনুযায়ী। লক্ষ্মী বা শ্রীকৃষ্ণের পূজো এই সময়ে বন্ধ রাখা গেলেও বাড়িতে শিবলিঙ্গ থাকলে তা সম্ভব নয়। অভিষেক করতেই হবে। তার জন্য কোনো পুরোহিত নিযুক্ত করতে হবে অথবা প্রতিবেশির সাহায্য নিতে হবে।
৫. এছাড়া বলা হয়, শিব যেহেতু ‘পারফেকশনিস্ট’, তাই বিন্দুমাত্র ত্রুটি তিনি সহ্য করেন না। একটু উনিশ-বিশ হলেই তার ক্রোধের উদ্রেক হতে পারে। তাই তাকে বাড়িতে রেখে বিপদ না বাড়ানোই ভালো।