দুর্গা পূজায় ষষ্ঠীর দিন সন্ধ্যায় দেবী শুরু হয় দুর্গাপুজোর নিয়ম। হয় ঘট বসানো। ওই দিনই হয় কলাবউ পূজোও। তবে ষষ্ঠীর দিন মা মঙ্গলার সামনে ঘট বসানো হয় না। নবপত্রিকা দুর্গাপূজার একটি বিশিষ্ট অঙ্গ। নবপত্রিকা শব্দটির আক্ষরিক অর্থ নয়টি গাছের পাতা। তবে বাস্তবে নবপত্রিকা নয়টি পাতা নয়, নয়টি উদ্ভিদ। এগুলো হলো: কদলী বা রম্ভা (কলা), কচু, হরিদ্রা (হলুদ), জয়ন্তী, বিল্ব (বেল), দাড়িম্ব (ডালিম), অশোক, মান ও ধান।
নবপত্রিকা নজন দেবীর প্রতীক। কলা রূপে ব্রহ্মাণী, কচু রূপে কালিকা, হলুদ রূপে উমা, জয়ন্তী রূপে কার্তিকী, বেল রূপে শিবানী, ডালিম রূপে রক্তদন্তিকা, অশোক রূপে শোকরহিতা, মান রূপে চামু-া এবং ধান রূপে লক্ষ্মী। শাস্ত্রে নবপত্রিকাকে বলা হয়েছে ‘নবপত্রিকাবাসিনী নবদুর্গা’। মনে করা হয়, নয়টি উদ্ভিদের পুজো করে আসলে ভারতের প্রাচীন কৃষি ব্যবস্থার কথাই তুলে ধরা হয়। কৃষিপ্রধান দেশে যাতে শস্যের ফলন ভালো হয়, তাই নয়টি উদ্ভিদের পাতা ও শিকড়কে দেবী রূপে পূজো করা হয়।
মহাসপ্তমীর দিন সকালে জলাশয়ে নিয়ে যাওয়া হয় নবপত্রিকাকে। পুরোহিত কাঁধে করে নিয়ে যান। পিছন পিছন ঢাকিরা যায় ঢাক বাজাতে বাজাতে। স্নানের পর নবপত্রিকা বা কলাবউকে লালপাড়ওয়ালা সাদা শাড়ি পরানো হয়। সিঁদুর দেওয়া হয়। দুর্গার ডানদিকে তথা গণেশের পাশে স্থান দেওয়া হয় নবপত্রিকাকে। কলাবউকে সাধারণ মানুষ গণেশ ঠাকুরের বউ বললেও আসলে কিন্তু নবপত্রিকা মহামায়ার নয়টি রূপ।