পৃথিবীর সেরা ১০টি গোয়েন্দা সংস্থা
পরাগ মাঝি : প্রত্যেক দেশেরই অন্তত একটি গোয়েন্দা সংস্থা থাকে; যারা জাতীয় স্বার্থ এবং দেশকে সুরক্ষায় নিয়োজিত থাকে। এই সংস্থাগুলো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে এবং দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহযোগিতা করে। নিচে ২০১৫ সালে নির্বাচিত সেরা ১০টি গোয়েন্দা সংস্থার তালিকা দেওয়া হলোÑ
০১. আইএসআই (পাকিস্তান) : পৃথিবীর সবচেয়ে সেরা গোয়েন্দা সংস্থার স্থানটি নিয়ে নিয়েছে পাকিস্তানের আইএসআই। বলা হয়ে থাকে আইএস তার কৃতকর্মের কোনো চিহ্ন রাখে না। নেই তাদের নিজস্ব কোনো লগোও। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পরের বছরই অর্থাৎ ১৯৪৮ সালে আইএসআই প্রতিষ্ঠিত হয়। ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে বের করতে আইএসআই-এর হাত ছিল বলে ধারণা করা হয়। সূত্র : এবিসি নিউজ পয়েন্ট
০২. সিআইএ (যুক্তরাষ্ট্র) : যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি পৃথিবীর সবচেয়ে সেরা ১০ গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এই সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এনএসএ), ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (ডিআইএ) এবং ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেসন (এফবিআই)-এর সঙ্গেও কাজ করে। সিআইএ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৭ সালে। সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে এটি যুক্তরাষ্ট্রকে নিরবচ্ছিন্নভাবে সহযোগিতা করছে এবং সারা পৃথিবীতে লুকিয়ে থাকা সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর নেটওয়ার্ক ধ্বংস করে দিতে এরা বেশ তৎপর।
০৩. এমআই ৬ (ব্রিটেন) : মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স সিক্স যুক্তরাজ্যের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগেই এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। লন্ডনের ভক্সহল ক্রসে এর সদর দফতর অবস্থিত। এমআই সিক্স মোসাদ এবং আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-র সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রাখে। যুদ্ধ এবং সন্ত্রাস নির্মূলে এটি এই তিন সংস্থা একে অপরের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করে।
০৪. এফএসবি (রাশিয়া) : এফএসবি বা কেজিবি রাশিয়ার কেন্দ্রীয় গুপ্তচর সংস্থা। এটি ক্রেমলিনের সঙ্গে একীভূত হয়ে কাজ করে। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ১০টি গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে এটি ৪র্থ অবস্থানে রয়েছে। এফএসবি’র প্রায় আড়াই লাখ লোকবল রয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে সন্ত্রাসী কর্মকা- এবং চোরাচালান নিয়েও এটি কাজ করে।
০৫. বিএনডি (জার্মানি) : শত্রুদের উপর গোয়েন্দাবৃত্তি ও তাদের দুর্বলতা, পরিসংখ্যান এবং পরিকল্পনা খুঁজে বের করতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগেই জার্মানিতে বিএনডি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংস্থাটি তার প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই সুনাম ধরে রেখেছে। ২০১৫ সালের জরিপে এটি পৃথিবীর পঞ্চম সেরা গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে।
০৬. ডিজিএসই (ফ্রান্স) : ‘ডিরেকশন জেনারেল ডি লা সিকিউনিটি’ অর্থাৎ ডিজিএসই ফ্রান্সের পুরনো এসডিইসিই এর পরবর্তী পদক্ষেপ। দেশটির ভিতরে শান্তি এবং উন্নতিকে নিশ্চিত করাই এই সংস্থার কাজ। দেশের ভিতরে যেন কোনো সন্ত্রাসী কর্মকা- না ঘটে সেজন্য এটি কাজ করে। জানা গেছে, এ পর্যন্ত প্রায় ১৫টি সন্ত্রাসী হামলা এই সংস্থাটি ঠেকিয়ে দিয়েছে। ডিজিএসই-এর প্রায় ৫ হাজার লোকবল রয়েছে।
০৭. এএসআইএস (অস্ট্রেলিয়া) : ১৯৫২ সালে এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর সদর দফতর ক্যানবেরা। অস্ট্রেলিয়ান সরকারের নিয়ন্ত্রণে এটি কাজ করে। অন্যান্য কিছু দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে এটি সমন্বয় করে কাজ করে। এটি মূলত অস্ট্রেলিয়ার অগ্রগতি এবং দেশটিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বহির্বিশ্বে উপস্থাপন করে। বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবে এর যথেষ্ট সুনাম রয়েছে।
০৮. এমএসএস (চীন) : মিনিস্ট্রি অব সিকিউরিটিই চীনের গোয়েন্দা বিভাগ। এই বিভাগ দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ব্যাপারগুলোতে কড়া নজরদারি রাখে। এমএসএস-এর সদর দফতর দেশটির রাজধানী বেইজিংয়ে অবস্থিত। দেশটির অন্যান্য নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থাগুলোর মাঝে সমন্বয় করাও এই সংস্থার অন্যতম কাজ। দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে নিজেদের আধিপত্যকে জোরদার রাখতে এটি পাকিস্তানের আইএসআই-এর সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্কের মাধ্যমেও যৌথভাবে কিছু কাজ করে।
০৯. ‘র’ (ভারত) : ‘র’ ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সদর দফতর রাজধানী নয়াদিল্লিতে। সংস্থাটি প্রতিবেশী এবং সুনির্দিষ্ট আরও কিছু দেশের তথ্য সংগ্রহ করে। ভারতের পরমাণুু প্রকল্পগুলোকে সুরক্ষা দেওয়াও এর কাজ।
১০. মোসাদ (ইসরায়েল): ১৯৪৯ সালে এর কার্যক্রম শুরু হয়। এর লক্ষ্য স্পর্শকাতর তথ্য সংগ্রহ ও এর বিশ্লেষণ। জাতীয় নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাস প্রতিরোধে এরা দক্ষ। আরব এবং মুসলিম দেশসমূহে এদের প্রধান নজর। এর ৮টি স্বতন্ত্র শাখা রয়েছে।