ম্যাক্ডোনাল্ড মিঠুন বৈরাগী
“মনুষ্য যদি সমুদয় জগৎ লাভ করিয়া আপন প্রাণ খোয়ায়, তবে তাহার কি লাভ হইবে?” মার্ক ৮:৩৬ পদ।
কোনো একসময় একজন লোক বাস করতো, তার একটুকরো ভালো জমি ছিল। সে ধনী ছিল না কিন্তু এই জমির আয়ে তার সংসার খুব ভালোভাবে চলে যেত। তবে সে অন্যান্য জমিদারদের মতো ছিল না। সে চিন্তা করল তার আরও কিছু জমি দরকার। তাই পয়সা বাঁচিয়ে সে বেশকিছু জমি কিনলো। নতুন জমিতে ভালো ফসল হলো। সেই ফসল বিক্রি করে সে আরও বেশি জমি কিনলো। একদিন সে শুনলো যে কোথাও খুব সস্তায় অনেক জমি পাওয়া যাচ্ছে। সে দেরি না করে জমি কিনতে রওনা দিল। সেখানে গিয়ে সে জমির দাম জিজ্ঞেস করল।
“আমাদের জমির দাম সব সময় একই আছে- দৈনিক এক হাজার টাকা।” “এ কি রকম দাম- দৈনিক এক হাজার টাকা?” “দেখুন, আমাদের জমির মাপার কোন উপায় নাই, তাই আমরা নিয়ম করেছি, এক হাজার টাকায় আমরা সেই টুকু জমি দেব যেটুকু জমি একটা লোক, একদিনে হেঁটে ঘুরে আসতে পারে। সূর্যাস্তের সাথে সাথে তার রওনা দেবার জায়গায় ফিরে আসতে হবেÑ ব্যাস।”
উদ্গ্রীব ক্রেতা খুব সকালে উঠে হাঁটা আরম্ভ করল। জমি খুব ভালো। একদিনে অনেক জমির মালিক হবে বলে সে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। প্রথমে হেঁটে, পরে দৌড়িয়ে সে জমি দখল করতে লাগল। রোদে সে খুব ক্লান্ত হয়ে পড়ছিল। তাতে কি, জমি দখল করতে হবে। সূর্য প্রায় ডুবে যাচ্ছে। আর এক পাড়া, আর এক হাত, যেটুকু নিয়ে রাখা যায়। দৌড়াতে, দৌড়াতে সে হাঁপিয়ে গেল, তবুও দৌড়াতে থাকল। কিছুক্ষণ পরে জমির বিক্রেতাকে দেখা গেল। সে আগের জায়গায় মাথায় টুপি খুলে বসে আছে ক্রেতা যখন তার কাছে এল তখন এসেই ধপাস্ করে পড়ে গেল।
বিক্রেতা বলল, “সাবাস, অনেক জমি কিনেছে।” কিন্তু কোনো উত্তর শোনা গেল না। সম্ভাব্য ক্রেতা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই মারা গিয়েছে। তারা তাকে কবর দিল মাত্র ছয় ফুট (চার হাত) জায়গা লাগল। এক হাজার টাকার জমি কিনতে জীবন দিল কিন্তু জমির মালিক হতে পারল না। আমাদের এই জমির চেয়ে আরও মূল্যবান কিছু লাভ করতে হবে আমাদের স্বর্গ লাভ করতে হবে। অনেকে জাগতিক আমোদ প্রমোদে তাদের জীবন বিক্রি করছে। তাদের অবস্থা ঐ বেচারার মতো হবে। আমাদের কি প্রথমে অনন্ত জীবন সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া উচিৎ নয়? সংগৃহীত