৭৫ পরবর্তী ক্ষমতাসীনরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নস্যাৎ করেছে : রানা দাশ
রফিক আহমেদ: বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, পঁচাত্তর পরবর্তী ক্ষমতাসীনরা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নস্যাৎ করেছে। গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট আয়োজিত ‘আসন্ন দুর্গা পূজায় নিরাপত্তা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। রানা দাশগুপ্ত সংখ্যালঘুদের উপর হামলার বিচার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালে করার দাবি জানিয়ে বলেন, শিগগিরই ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুটি সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে। সংখ্যালঘুদের ওপর বিভিন্ন সময়ে নির্যাতন, হামলা ও খুনসহ বিভিন্ন মামলার বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনালে করতে হবে। যেন দ্রুততম সময়ে সেসব মামলার নিষ্পত্তি করা যায়। ২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে ২০১৬-র জুন পর্যন্ত দেশে ২৮ জন সংখ্যালঘুকে খুন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের অধিকার আদায়ে সরকারের আলোচনার টেবিলেই কথা হয়, কিন্তু বাস্তবায়নের জায়গাতেই সমস্যা। সরকার চাইলেই দেশের সব জনগণের নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব। সেটা নির্ভর করবে রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর।
রানা দাশগুপ্ত বলেন, পাকিস্তান আমলে ধর্মকে রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় স্বার্থে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বাঙালিরা তা চায়নি। অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠনের চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এখনও দেশের জনগণের একটি বড় অংশ যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, তারাই সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়িয়ে যাচ্ছে। ধর্মের নামে যারা মানবতার বিরুদ্ধে ভূমিকা পালন করছে তাদের বিরুদ্ধে মানসিকভাবে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যাতে ধর্ম যেন রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহৃত না হয়।
তিনি বলেন, আসন্ন দুর্গা পূজা উদযাপন অনুষ্ঠানে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। পূজা চলাকালীন সময়ে জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় প্রশাসনসহ দল-মত নির্বিশেষে আমাদের সকলকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। পাশাপাশি এ ব্যপারে প্রশাসনকে সচেষ্ট থাকারও আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। ঈদে তিনদিন ছুটির সঙ্গে নির্বাহী আদেশে আরও বাড়তি ছুটি যোগ করা হয়। অথচ বাঙালির সার্বজনীন এ দুর্গা পূজায় একদিনের ছুটি। যেদিন ছুটি সেদিন পূজার সব আনুষ্ঠানিকতাই শেষ হয়ে যায়। তাই দুর্গা পূজায়ও তিনদিনের ছুটি এখন সার্বজনীন দাবি।
সভায় আরও বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি ড. প্রভাস চন্দ্র রায়, মহাসচিব আনন্দ বিশ্বাস, মুখপাত্র পলাশ কান্তি দে, ইসকন বাংলাদেশের সভাপতি সত্যরঞ্জন বাড়ৈ, প্রদীপ কুমার মন্ডল, অমল চন্দ্র রায়, অধ্যাপক ভারত সেবাশ্রম, সঙ্গীতানন্দ মহারাজ, শ্রামল কুমার রায়, সজীব বৈদ্য ও মিনা দেবী মৈত্রী প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন সুকৃতি মন্ডল ও পলাশ দে। সম্পাদনা: প্রিয়াংকা