এ যুদ্ধপাগলামি, দুদেশের মানুষের জন্যই মৃত্যুর বার্তা : হামিদ মীর
ওমর শাহ : ভারত ও পাকিস্তানে দেশপ্রেমের নামে মিডিয়ার ওপর শুরু হওয়া এ অঘোষিত সেন্সরশিপ আরোপ থেকে যুদ্ধপাগলামি জন্ম নিচ্ছে। এ যুদ্ধপাগলামি দুদেশের সাধারণ মানুষদের জন্যই মৃত্যুর বার্তা দিচ্ছে। পাকিস্তানের জিও টিভির নির্বাহী সম্পাদক হামিদ মীর বৃহস্পতিবার দৈনিক জং-এ প্রকাশিত কলামে একথা বলেন।
হামিদ মীর বলেন, জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের কাশ্মীরিদের সমর্থনে বক্তব্যের পর ভারতের যুদ্ধপাগলামি আরও বেড়ে গেছে। আর এ যুদ্ধপাগলামির প্রভাব পাকিস্তানেও পড়বে। পাকিস্তান সরকারকে ভাবা উচিত, ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ হলে কে আমাদের পাশে থাকবে আর কে আমাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাবে। এ ছাড়া পাকিস্তানের বন্ধুপ্রতীম সব দেশই কী যুদ্ধের সময় আমাদের পাশে থাকবে? এটা স্পষ্ট, আমেরিকা আমাদের সঙ্গে নয়, ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে যাবে। চীন পাকিস্তানের বন্ধু। কিন্তু ১৯৭১ সালের যুদ্ধে চীন আমাদের সেনাসাহায্য থেকে আপত্তি তুলেছিল। আগামীতে চীন কী করবে? আমাদের কাছে কী এর কোনো গ্যারান্টি আছে?
‘মিডিয়া ও যুদ্ধপাগলামি’ শিরোনামে প্রকাশিত কলামে হামিদ মীর বলেন, এ যুদ্ধপাগলামি থেকে কিছু মানুষ নিজের ফায়দা উঠিয়ে নিচ্ছে। উরিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদর দফতরে হামলা থেকেও ওইসব লোক ফায়দা নিচ্ছে, যা গত দুমাসে জম্মু-কাশ্মীরে শুরু হওয়ার এক রাজনৈতিক আন্দোলনের পর দেখা দিয়েছে। উরি হামলা যে যুদ্ধপাগলামির জন্ম দিয়েছে তা থেকে ফায়দা উঠানোর জন্য ব্রাহামদাগ বুগতিও মাঠে চলে এসেছেন। অন্যদিকে, খালেস্তানের সমর্থক কিছু শিখ নেতাও পাকিস্তানের কাছে দাবি তুলছে, যদি ভারত ব্রাহামদাগ বুগতির পূজা করে তবে পাকিস্তানও যেন খালেস্তানের সমর্থন করে।
হামিদ মীর বলেন, পাকিস্তানের কূটনৈতিক ময়দানে ভারতকে মোকাবিলার জন্য অব্যাহত পররাষ্ট্রনীতি প্রয়োজন। ভারতকে মোকাবিলার জন্য সবার আগে প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। আর জাতীয় ঐক্যের জন্য প্রয়োজন মিডিয়ার শক্তিশালী ভূমিকা। পাকিস্তানি মিডিয়া কী জাতীয় ঐক্যের জন্য কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে? যে মিডিয়া নিজেদের স্বাধীনতার জন্য নিজেরাই ঐক্যবদ্ধ নয়, তারা জাতিকে কী ঐক্যবদ্ধ করবে? মিডিয়া স্বাধীনতা ও সেন্সরশিপ থেকে মুক্তি না পেলে যুদ্ধের মাঠে মিডিয়া কোনো ভূমিকা পালন করতে পারবে না। মিডিয়ার কাজ দেশের কোনো প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করা নয়, বরং জনগণের ফায়দা রক্ষা করা। জনসাধারণের সমর্থন ও সহযোগিতা ছাড়া যুদ্ধে জয় সম্ভব নয়। মিডিয়ার স্বাধীনতা দেশ ও সাধারণ জনগণের মাঝে সম্পর্ককে শক্তিশালী করবে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শত্রুদের ষড়যন্ত্রকে বিফল করে দিবে। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি