ডিসিসিআইর সেমিনারে বক্তারা শিল্পনীতি অর্থনীতির সহায়ক নয়
জাফর আহমদ: ঘোষিত শিল্পনীতি-২০১৬ অর্থনীতির সহায়ক নয়। এ নীতি বিদ্যমান রাজস্বনীতি, মুদ্রানীতি, আমদানি-রপ্তানি নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। গতকাল শনিবার মতিঝিলের ডিসিসিআই মিলনায়তনে ‘জাতীয় শিল্পনীতি ২০১৬: বাংলাদেশে শিল্পায়ন ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন।
ডিসিসিআইর সভাপতি হুমায়ুন রশিদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। বক্তব্য রাখেন, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিআইডিএ) নির্বাহী সদস্য নাভাস চন্দ্র ম-ল, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ইয়াসমিন সুলতানা ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট’র (পিআরআই) সিনিয়র ইকোনমিস্ট ড. আশিকুর রহমান। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ইসমাইল হোসেন।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, বর্তমান সরকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে শিল্পনীতি প্রণয়ন করেছে। প্রয়োজনে এ নীতিমালায় সংশোধন ও বিয়োজনের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর দেশ হওয়ার কারণে শিল্পনীতিতে কৃষি ও কৃষি-ভিত্তিক শিল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তিনি তৈরি পোশাক খাতের পাশাপাশি অন্যান্য খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে উৎপাদিত ওষুধ পৃথিবীর ১২৩টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে, তবে এ শিল্পের ব্যবহৃত কাঁচামালের ৭৫ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয় হয় বলে জানান শিল্পমন্ত্রী। তিনি বলেন, ওষুধ শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল বাংলাদেশে উৎপাদনের জন্য মনোযোগী হতে হবে। সরকার সারাদেশে প্রায় ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস-বিদ্যুৎসহ অন্যান্য অবকাঠামোগত সুযোগ প্রদান করবে।
তিনি আরও বলেন, ইকোনমিক জোন সমূহের ৩০ শতাংশ জমি বিসিককে বরাদ্দ প্রদান করা হবে এবং এ সব প্লট দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তাদের মাঝে বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সাভারের চামড়া নগরীতে ৬০টির মতো ট্যানারিকে স্থানান্তর করা সম্ভব হবে।
হুমায়ুন রশিদ বলেন, জাতীয় শিল্পনীতি-২০১৬-এর লক্ষ্য হলো জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্প খাতের অবদান ৩৫ শতাংশে উন্নীত করা। জাতীয় শিল্পনীতি প্রণয়ন সরকারের একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক সক্ষমতা ইনডেক্স এবং ডুইং বিজনেস ইনডেক্স-এ বাংলাদেশের অবস্থান উন্নীতকরণের জন্য সরকার ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও গ্যাসের অপ্রতুলতার সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানান ডিসিসিআইর এ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। তিনি বলেন, শিল্পনীতি ২০১৬ বাস্তবায়ন করতে হলে অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সব শিল্প খাতের সমন্বয়ের মাধ্যম করতে হবে।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন তার মূল প্রবন্ধে বলেন, অবকাঠামোসহ অন্যান্য খাতে বিদেশি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করার জন্য আরও বেশি হারে প্রণোদনা প্রদান করা প্রয়োজন। সম্পাদনা: উম্মুল ওয়ারা সুইটি