অবশেষে হেলিকপ্টারযোগে দাফনের আগে কেঁদে উঠা শিশু ঢাকায়
ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরে দাফনের আগে কেঁদে উঠা শিশুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় আনা হয়েছে। শনিবার বিকালে সোলায়মান সুখন ও সামিউল হক নামের ঢাকার দুই ব্যক্তির সহায়তায় শিশুটিকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে আনা হয়।
চিকিৎসকরা শিশুটিকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দিলেও শিশুর শারীরিক অবস্থার কারণে সড়কপথে ঢাকা নেওয়া সম্ভব ছিল না। আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় নেওয়া শিশুটির পরিবারের জন্যও ছিল অসম্ভব। শিশুটির দাদা আবুল কালাম মিয়া জানান, গণমাধ্যমের সংবাদ দেখে ঢাকার একজন হৃদয়বান ব্যক্তি হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় শিশুটির বাবা মোবাইল ফোনে জানান, শিশুটিকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তির প্রক্রিয়া চলছে। শিশুটির চিকিৎসা টিমের প্রধান ডা. আবদুল্লাহ হিস সায়াদ জানান, শিশুটিকে আরও ১ দিন আগেই আমরা ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু পরিবারের আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় তারা নিতে পারছিল না। ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা গেলে শিশুটি সুস্থ হয়ে উঠতে পারে। তিনি এ সময় আরও জানান, ৫ মাস ২২ দিনে জন্ম নেওয়া শিশু, তাই তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে কিছু বলা যাবে না। শনিবার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে ফরিদপুর ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল হাসপাতাল-এর ইনকিউবিউটর থেকে বের করে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়। অ্যাম্বুলেন্সযোগে তাকে নেওয়া হয় ফরিদপুর স্টেডিয়ামে। সেখান থেকে পারটেক্স এভিয়েশনের একটি হেলিকপ্টারযোগে বিকাল সাড়ে ৫টায় তাকে নিয়ে ঢাকার পথে রওয়ানা দেন পরিবারের দুই সদস্য।
হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করে দেওয়া ব্যক্তির একজন সামিউল হক। তিনি জানান, গণমাধ্যমে সংবাদ দেখে নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোলায়মান সুখন শিশুটিকে ঢাকায় নেওয়ার জন্য একটি হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে আমরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে শিশুটিকে ঢাকায় আনার জন্য ফরিদপুরে হেলিকপ্টার পাঠাই।
শিশুটি ফরিদপুর শহরের কমলাপুর এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হুদা মিঠু (২৬) ও নাজনীন আক্তার (২৩) দম্পতির প্রথম সন্তান। আগামী জানুয়ারি মাসে ভূমিষ্ঠ হওয়ার কথা থাকলেও শিশুটি ৫ মাস ২২ দিনের মাথায় বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ভূমিষ্ঠ হয়। জন্মের দেড় ঘণ্টা পর শিশুটিকে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা দেন। পরে সকাল ছয়টার দিকে শহরের আলীপুর কবরস্থানে দাফন করার সময় শিশুটি কেঁদে ওঠে। সম্পাদনা: রিকু আমির