জঙ্গিদমনে ইতিবাচক ভূমিকায় পুলিশে স্বস্তি
আজাদ হোসেন সুমন: জঙ্গিদমনে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে পেরে পুলিশ প্রশাসনে স্বস্তি বিরাজ করছে। জনমনে এবং সরকারের শীর্ষমহলে নিজেদের সাফল্য তুলে ধরতে পেরে ক্যারিয়ারে যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা।
সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ার ঘটনা থেকে জঙ্গি প্রশ্নে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল প্রক্রিয়ায় সূত্রপাত ঘটে। এখানে গত রোজার ঈদের দিন জঙ্গিদের একটি সম্ভাব্য হামলা বানচাল করে কর্তব্যরত পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। এ ঘটনায় পুলিশ বাহিনীর ২ সদস্য আনসারুল ইসলাম ও জহিরুল হক নিহত হন। বিষয়টি সর্বত্র আলোচিত হয়। এছাড়া গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয়, কল্যাণপুরে জাহাজ বিল্ডিং, মিরপুরের রূপনগর নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়া ও আজিমপুরে আস্তানায় সফল অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। এতে বেশকজন মাস্টারমাইন্ড নিহত হয় এবং কয়েকজন আহত অবস্থায় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। বাকি জঙ্গিরা পুলিশের অব্যাহত অভিযানে কোণঠাসা হয়ে পড়ে এবং নিজেদের গুটিয়ে নেয়। জঙ্গিবাদ নিয়ে জনমনে বিরাজ করা আতঙ্ক অনেকটাই কেটে যায়। বহির্বিশ্বের পুঁজি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার আশঙ্কা থেকে রক্ষা পায় বাংলাদেশ। হলি আর্টিজানে জঙ্গিহামলায় বিশ্বদরবারে ক্ষুণœ হওয়া ভাবমূর্তি অনেকটা পুনরুদ্ধার হয়। ফলে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে দেশের সর্বস্তরের মানুষ পুলিশের উপর সন্তুষ্ট হয়।
আইজিপি একেএম শহীদুল হক বলেন, জঙ্গি মোকাবিলায় পুলিশের ভূমিকার মূল্যায়নের ভার জনগণের উপর ছেড়ে দিলাম। তিনি বলেন, আমরা আমাদের কাজের উপর শ্রদ্ধাশীল। তিনি বলেন, দেশ মাতৃকার টানে, জাতির প্রয়োজনে পুলিশ বরাবরই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত যেকোনো সময়ের তুলনায় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং ভালো বলে তিনি উল্লেখ করেন। যে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সন্ত্রাস ও জঙ্গি মোকাবিলা করতে গিয়ে নিহত ও আহত হয়েছে তাদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে এবং আগামীতেও এ অকুতোভয় সৈনিকরা পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের কাছে আদর্শ হয়ে থাকবেন বলে মন্তব্য করেন আইজিপি।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা দেখিয়ে দিয়েছে কিভাবে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করতে হয়। তিনি বলেন, পুলিশ দেশবাসীর আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা আমাদের উপর দায়িত্ব সফলতার সঙ্গে পালন করতে পেরে খুশি। তিনি বলেন, জঙ্গিদের মাজা ভেঙে দিয়েছি, বাংলাদেশে ওরা আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।
ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) হুমায়ুন কবীর বলেন, পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা অকুতোভয় সৈনিকের মতো নিজেদের জীবন বাজি রেখে জঙ্গি মোকাবিলায় কাজ করেছে। লিবারেশনের সময়ও রাজারবাগ থেকেই প্রথম পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাই। দেশ জাতির ক্রাইসিস ও নিরাপত্তার প্রশ্নে পুলিশ সদস্যরা বরাবরই নিবেদিত বলে তিনি উল্লেখ করেন। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম