খেলাপি ঋণ অর্থনীতিকে বাধা গ্রস্ত করছে : গর্ভনর
জাফর আহমদ: বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবীর বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। খাদ্য উৎপাদন, রপ্তানি বাণিজ্য এবং সামাজিক নিরাপত্তার সূচকগুলো এখন প্রতিবেশী অনেক দেশের চেয়ে ভাল। কিন্তু ব্যাংকিং খাতের ঋণ খেলাপি সংস্কৃতি এ সব অর্জনকে ম্লান করছে। গতকাল রাজধানীর মিরপুরে ইনিস্টিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ফর ব্যাংকার্স এন্ড একাডেমিক-২০০৬’ শীর্ষক দুইদিনব্যাপী সম্মেলন উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিআইবিএম এর নির্বাহী পরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাবেক গর্ভনর ড. ফরাস উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বিআইবিএম এর পরিচালক, ড. প্রফেসর প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জি।
অনুষ্ঠানে গর্ভনর ফজলে কবীর বলেন, ব্যাংকিং খাত প্রয়োজন নির্ভর সেবাখাত। পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থায় প্রতি মুর্হূতে পরিবর্তন হচ্ছে। প্রবর্তিত হচ্ছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। এ জন্য দেশে বিদেশে বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের অভিজ্ঞতার বিনিময়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যাতে এক দেশের ব্যাংকারদের অভিজ্ঞতা আরেক দেশের ব্যাংকারদের সাথে বিনিময় করার মধ্যদিয়ে ব্যাংকিং খাতের সেবা নিশ্চিত করা ও ঝুঁকি মোকাবিলা করা যায়।
সাবেক গর্ভনর ড. ফরাস উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে উন্নয়নের জন্য নানামুখি পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নের ফলে অর্থনীতির সকল সূচকে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে। এ সাফল্য অর্থনীতির প্রাণশক্তিকে বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত করেছে। এ কারণে ২০০৭-০৯ সাল পর্যন্ত বৈশ্বিক মন্দার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতির কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। রপ্তানি বাণিজ্যে নেতিবাচক কোনো প্রভাব পড়েনি।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাস করতো। ২০০৮ সালে নেমে আসে ৪০ শতাংশে। ২০১৬ সালে নেমে আসে ২২ শতাংশে। দেশের শিল্প-বাণিজ্য, কৃষি, আমদানি-রপ্তানি, সামাজিক নিরাপত্তায় ও প্রবাসী আয় বৃদ্ধির কারণে এ সাফল্য অর্জিত হয়।
প্রবৃদ্ধির বিভিন্ন এককের অগ্রগতি তুলে ধরে সাবেক গর্ভনর জানান, কৃষি ক্ষেত্রে ২০০৫-০৬ সালে অবদান ছিল ২২ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০০৯-১০ অর্থবছরে হয়েছে ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ। একই সময়ে শিল্পে ৬ দশমিক ৯ থেকে ৮ দশমিক ৩ শতাংশ; সেবাখাতে ১৭ দশমিক ৭ থেকে ২১ দশমিক ৩ শতাংশ; কর্মসংস্থান ৪৭ দশমিক ৫৫ দশমিক ২ শতাংশ; কর্মসংস্থান ৪৯ দশমিক ৫ শতাংশ এবং কর্মসংস্থানের হার ৪ দশমিক ৩ থেকে ৩ দশমিক ৭ শতাংশে হয়েছে। একটি বাদে ৭টি সূচকেই বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়েছে। এটা অর্থনৈতিক সক্ষমতার সত্যিকারের দিক বলে তিনি উল্লেখ করেন। কিন্তু বাংলাদেশের এই অর্জনকে খেলাপি ঋণ সংস্কৃতি ম্লান করে দিচ্ছে। সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু