নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব মন্ত্রণালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি অফিস সময়ের পর সচিবালয়ে অবস্থানে নিষেধাজ্ঞা
আানিসুর রহমান তপন : অফিস সময়ের পর কর্মচারীদের সচিবালয়ে অবস্থানে নিষেধাজ্ঞা এবং বিশেষ প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতির বাধ্যবাধকতা নির্দেশ করার সাথে সাথে সচিবালয়ের নিরাপত্তায় নির্মাণ করা হচ্ছে ওয়াচ টাওয়ার ও সেন্ট্রি পোস্ট। সচিবালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিবসহ সব সচিবকে চিঠি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সচিবালয় প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র হওয়ায় জরুরি প্রয়োজনে অফিস সময়ের পরও কোনো কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী অফিসে কাজ করেন। আবার কিছুসংখ্যক কর্মচারী বিনা অনুমতিতে সচিবালয়ে রাতে অবস্থান করেন যা কাম্য নয়। সচিবালয় সংরক্ষিত স্পর্শকাতর স্থাপনা বিধায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পূর্বানুমতি ছাড়া সচিবালয়ে কেউ রাতে অবস্থান করতে পারবেন না। চিঠির মাধ্যমে সিনিয়র সচিব ও সচিবদের নিকট তাদের মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কোনো কর্মচারী যেন অনুমতি ছাড়া সচিবালয়ে রাতে অবস্থান না করেন তা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে। এছাড়া বিশেষ প্রয়োজনে কোনো কর্মচারীর রাতে সচিবালয়ে অবস্থান করা অপরিহার্য হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো এবং দীর্ঘ সময় অবস্থানের প্রয়োজন হলে সেক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে।
এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে বলেন, এটি নতুন কোনো বিষয় নয়। আগে থেকেই এ ব্যবস্থা চালু আছে। সচিবালয়ে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ে একটি কেন্দ্রীয় ওয়ারলেস নেটওয়ার্ক চালু আছে। এখানে অনেক স্পর্শকাতর মেশিনারিজ রয়েছে। এখানে যারা কাজ করেন, ২৪ ঘণ্টাই তারা বিভিন্ন শিফটে কাজ করে থাকেন। এজন্য তাদের আগে থেকেই সচিবালয়ের ভেতরে থাকার অনুমতি নেওয়া আছে। কমান্ড সেন্টারের মাধ্যমে যাতে মুহূর্তে দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় যোগাযোগ, তথ্য সংগ্রহ ও দিক-নির্দেশনা দেওয়া যায় সেজন্য এ ওয়ারলেস নেটওয়ার্ক চালু করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, এর বাইরে যদি কেউ থাকতে চান তাহলে আগে থেকেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হবে।
তবে মাঝে কিছু দিন সচিবালয়ে নিরাপত্তার এ বিষয়টি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়নি স্বীকার করে সূত্র জানায়, এ কারণে সচিবালয়ে কর্মরত একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়ে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে গুরুত্ব আরোপ করেছে। তা না হলে সচিবালয়ের নিরাপত্তা হুমকি হতে পারে। গোয়েন্দা সংস্থা থেকে সচিবালয়ের নিরাপত্তার বিষয়টি কঠোর করার সুপারিশ করে। নিরাপত্তার এ বিষয়টি পুরনো হলেও অনেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগে নতুন কর্মকর্তারা যোগ দিয়েছেন। তারা বিষয়টি নাও জানতে পারেন, তাই তাদের বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্যই এ চিঠি দেওয়া হয়েছে। আর সচিবালয়ের নিরাপত্তার বিষয়টি রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন। এজন্য সচিবালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোনো অঘটন ঘটার আগেই আমাদের এ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। যাতে কোনো ঘটনা ঘটার পরে নয়, আগেই সেটি প্রতিরোধ করা যায়।
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, সচিবালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরি মধ্যে সচিবালয়ের চারদিকে ৭টি ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। বাউন্ডারি ওয়ালের বাইরে নিরাপত্তা বাহিনীর যেসব সদস্য সচিবালয়ের নিরাপত্তা দিয়ে থাকেন তাদের জন্য নির্মাণ করা হবে ১২টি চেকপোস্ট। এসব টাওয়ার ও চেকপোস্ট নির্মাণ শেষ হলে সচিবালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা সম্ভব হবে বলেও মনে করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই সূত্র। সম্পাদনা : আজাদ হোসেন সুমন