গুস্তাভ ক্ল্যামন্টের আঁকা ছবি বাঁচিয়েছিলো নারীকে
পরাগ মাঝি : গুস্তাভ ক্ল্যামন্টের জীবনে এডেলে ব্লচ বাওয়ার একমাত্র নারী ছিলেন না। যদিও গুস্তাভের সঙ্গে সম্পর্কের জের ধরে তিনি বহুবার আলোচনায় এসেছেন। গুস্তাভের শিল্পমনে সে সময় ধরা পড়েছিলো আরও বেশ কিছু সুন্দরী নারী।
লম্পট হিসেবে গুস্তাভের দারুণ কুখ্যাতি থাকলেও, ধারণা করা হচ্ছে তার এ লাম্পট্যই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান ন্যাৎসি সেনাদের হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছিলো এক নারীকে।
রোববার নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সম্প্রতি নিউইয়র্কের ন্যুই গ্যালারিতে গুস্তাভের আঁকা নারীদের ছবি নিয়ে ‘গুস্তাভ অ্যান্ড দ্য ওমিন অব ভিয়েনাস গোল্ডেন এজ, ১৯০০-১৯১৮’ শিরোনামে একটি চিত্র প্রদর্শনী চলছে। অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনার সোনালী সময়গুলোতে গুস্তাভ যেসব নারীর ছবি এঁকেছেন সেগুলোই মূলত প্রদর্শনীতে ঠাঁই পেয়েছে। ছবিগুলোতে ব্লচ বাওয়ার সহ পুলিৎজার বংশের তিন প্রজন্মের নারীর ছবিও আছে। এগুলো হলো- ইমপেরিয়াল শার্লোত্তে, তার মেয়ে সেরিনা লেডেরার এবং সেরিনার মেয়ে এলিজাবেথ।
গ্যালারির অধ্যক্ষ তবিয়াস ন্যাটার বলেন, ‘ক্ল্যামন্টের পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে সেরিনা ছিলেন সবচেয়ে সুসজ্জিত নারী। শিল্পি প্রতি সপ্তাহেই অন্তত একবার তার বাসায় খাওয়া-দাওয়া করতেন। সেরিনার মেয়ে এলিজাবেথ শিল্পিকে ‘আঙ্কেল’ বলে ডাকতেন।’
কিন্তু ১৯৩৮ সালে যখন জার্মান ন্যাৎসি সেনারা অস্ট্রিয়ায় প্রবেশ করে ইহুদি সেরিনা সেসময় একটি চমকপ্রদ তথ্য হাজির করেন।
ন্যাটার বলেন, ‘জাতিগত কারণে জীবন দেওয়ার হাত থেকে সেরিনা তার মেয়েকে বাঁচাতে চাইছিলেন। তিনি দাবি করেন, এলিজাবেথের শরীরে এক আর্যের রক্ত বইছে। সেই আর্য্য আর কেউ নন; গুস্তাভ ক্ল্যামন্ট। মজার ব্যাপার হলো, সে সময়ে সেরিনার স্বামী এবং ক্ল্যামন্ট দুজনই মৃত হওয়ায় এ নিয়ে বিতর্ক করার কেউ ছিলোনা। গুস্তাভের আঁকা কিশোরী এলিজাবেথের ছবিটিও সেসময় আলোচনায় উঠে আসে। এসব কিছু মিলিয়ে ততদিনে পরিণত নারী এলিজাবেথ সম্ভাব্য মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিলো।’
গুস্তাভ সম্পর্কে ন্যাটার মন্তব্য করেন, ‘তিনি যদি বছরে একটি পোট্রেইট এবং দুটি ল্যান্ডস্ক্যাপ আঁকতেন তবে এগুলো বিক্রি করে অনায়াসে একটি বিলাসবহুল বাড়ি কেনা যেতো। তিনি তার চিত্রকর্মগুলো মেয়েদের পেছনেই খরচ করতেন, তবে আমরা এগুলো বিক্রি করে হচ্ছি ধনি।’ সূত্র : নিউইয়র্ক পোস্ট। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম