বিশ্বপর্যটন দিবস আজ সম্ভাবনা বিপুল, প্রস্তুতি কম
দেলওয়ার হোসাইন: বৈচিত্র্যের কারণে বাংলাদেশের পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে নিরাপত্তা, অবকাঠামো, যোগাযোগ ও ভিসা-সংকটের কারণে পর্যটকদের আসতে নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে আজ ২৭ সেপ্টেম্বর পালিত হচ্ছে বিশ্বপর্যটন দিবস।
পর্যটনশিল্পের সাথে সম্পৃক্তরা বলছেন, বাংলাদেশে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন- সুন্দরবন। সেখানে আছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার। রয়েছে অসাধারণ চা বাগান এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার। কুয়াকাটায় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উপভোগ করা যায়। সিলেটে রয়েছে জলাবন রাতারগুল। এ দর্শনীয় স্থানগুলোর কারণেই বিদেশি পর্যটকদের জন্য বাংলাদেশ হতে পারে বিশ্বের সেরা দেশ।
ইন্ডাস্ট্রি স্কিলস কাউন্সিল ফর ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি সেক্টর চেয়ারম্যান এ. কে.এম বারী বলেন, পর্যটন খাতে বাংলাদেশের বিশাল সম্ভাবনা থাকলেও এ সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য সরকার ও দূতাবাসগুলোর যে প্রস্তুতি থাকার কথা, তা নেই। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পার হলেও বাংলাদেশের পর্যটন খাতে বাস্তবায়িত হয়নি কোনো মাস্টারপ্ল্যান। অথচ একই সময়ে তিনটি মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করে মালদ্বীপ পর্যটনকে তাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের এক নম্বর খাতে পরিণত করেছে।
এ.কে.এম বারী বলেন, ট্যুরিজম সেটেলাই একাউন্ট (পর্যটক পরিসংখ্যান) কর্মসূচি শুরু করার জন্য সরকারের সম্মতি নিতে লেগেছে ৫ বছর। তবে বিদেশি পর্যটকদের পরিসংখ্যান করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক, দূতাবাস, ট্যুরিজম অপারেটর, পরিসংখ্যান ব্যুরো ও সরকারকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
পর্যটনশিল্পের সাথে সম্পৃক্তরা বলছেন, যতদিন বিদেশি পর্যটকদের পরিসংখ্যান করা না যাবে ততদিন পর্যটনশিল্পকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না।
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান অপরূপ চৌধুরীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কোন দেশ থেকে কতজন পর্যটক বাংলাদেশে এসেছেন সে হিসাব আমাদের কাছে নেই। তবে মোট কতজন পর্যটক এসেছেন সে হিসাব আছে। অপরূপ চৌধুরীর বলেন, বিদেশি পর্যটকের হিসাব আমরা রাখি না। এ হিসাব রাখে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)।
পর্যটন করপোরেশনের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা এসবির কর্মকর্তাদের বলেছিলাম আপনাদের সফটওয়্যার থেকে আমরা যেন তথ্য পাই সে ব্যবস্থা করুন। কারা আসছে আমরা তাদের নাম জানতে চাই না। শুধু কোন দেশ থেকে আসছে, নারী না পুরুষ এ তথ্যটুকু দিলেই চলবে। কিন্তু বারবার বলার পরও তারা এ তথ্যটুকু দিতে রাজি হয়নি। ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) প্রেসিডেন্ট তৌফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের দরকার ট্যুরিস্ট। অথচ বাংলাদেশে কতজন ট্যুরিস্ট আসে তাদের কোনো তালিকা নেই। ব্যবসা, কূটনৈতিক কাজে কিংবা অন্য যেকোনো উদ্দেশ্যে ভিনদেশি কেউ বাংলাদেশে এলেই তাকে পর্যটক হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। বাস্তবে শুধু ভ্রমণের উদ্দেশ্যে পর্যটক আসছে খুবই কম।
ট্যুরিজম রিসোর্ট ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ট্রিয়াব) প্রেসিডেন্ট খবির উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিদেশি পর্যটক আকৃষ্ট করার মতো কোনো সুন্দর প্যাকেজ সিস্টেম বাংলাদেশে নেই। বেহাল সড়কব্যবস্থা, পর্যটনপণ্য নির্বাচনে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাব, প্যাকেজ সংকট ইত্যাদি বিদেশিদের আগ্রহে ভাটা তৈরি করেছে। পর্যটকদের চাহিদার ভিন্নতা অনুসারে পর্যটনপণ্য চিহ্নিত করে প্যাকেজ নির্ধারণের পরামর্শ দেন তিনি। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি