মোহাম্মদ আলী বোখারীষ টরন্টো থেকে হিলারিকে নিউইয়র্ক টাইমস ও শতবর্ষপর সিনসিনাটি ইনকোয়ারের সমর্থন
যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘হিলারি-ট্রাম্প’ প্রথম বিতর্কের সূচনায় দেশটির অন্যতম প্রভাবশালী পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস সমর্থন জানিয়েছে হিলারি ক্লিনটনকে। পাশাপাশি প্রায় এক শতাব্দী পর ‘সুয়িং স্টেট’ বা ‘সিদ্ধান্তহীন রাজ্য’ হিসেবে বিবেচিত ওহাইও অঙ্গরাজ্যের সিনসিনাটি ইনকোয়ার পত্রিকার সমর্থন হিলারির জন্য যথেষ্ট তাৎপর্য বয়ে এনেছে। তাতে পত্রিকার সমর্থন যে ‘অপ্রত্যাশিত বিজয়’-এর ক্ষেত্রে নিয়ামক ভূমিকা রেখে থাকে সেই মন্তব্যটি করেছে নিরপেক্ষ রেডিও প্রতিষ্ঠান ‘এনপিআর’ বা ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও।
গত শনিবার হিলারিকে নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকম-লী ‘হিলারি ক্লিনটন ফর প্রেসিডেন্ট’ শিরোনামের এক সম্পাদকীয়তে সমর্থনের কারণ হিসেবে বলেছেÑ ‘তার বুদ্ধিমত্তাসহ অভিজ্ঞতা ও সাহসের প্রতি এই সমর্থনের শেকড় প্রোথিত’। আর যোগ্যতার বিবেচনায় এ কথা বলার আগে সম্পাদকম-লী বলেছেÑ ‘ন্যূনতম পক্ষে ট্রাম্পের মতো হিলারি নন’। অবশ্য পত্রিকাটির জন্য এই সমর্থন প্রদান অপ্রত্যাশিত কোনো ছিল না, কেননা ১৯৫৬ সালে প্রেসিডেন্ট আইসেনহাওয়ারকেও তারা সমর্থন দিয়েছিল। তবে এবারের সমর্থনের পেছনে অপ্রত্যাশিত বিষয়টি হচ্ছেÑ অতীতে সম্পাদকম-লীর অনেকেই ডেমোক্রেট প্রার্থীর তুলনায় রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থীর প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করলেও এবার তা তারা করেননি।
পাশাপাশি এক শতাব্দী পর অর্থাৎ ১৯১৬ সালে ডেমোক্রেট দলীয় উইড্রো উইলসনকে সমর্থনের পর এই প্রথম সিনসিনাটি ইনকোয়ার আবার একই দলীয় প্রার্থী হিলারিকে সমর্থন জানিয়েছে। তারা তাদের সম্পাদকীয় ‘ইট হ্যাজ টু বি হিলারি ক্লিনটন’ শিরোনামের সম্পাদকীয়তে বলেছেÑ ‘অবশ্যই হিলারির ত্রুটি রয়েছে, তা সত্ত্বেও ওয়াশিংটনের ভেতরে ও বাইরে হিলারি তার সুদীর্ঘ জীবনে আমেরিকানদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করেছেন’। একইসঙ্গে বলেছেÑ ‘এখন সময় এসেছে যুক্তরাষ্ট্রে একজন মহিলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের, কেবল মহিলা বলে নয়, বরং তিনিই যথোপযুক্ত পছন্দ’।
এর আগে সেপ্টেম্বরের শুরুতে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাস মর্নিং নিউজ, যে পত্রিকাটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে অন্তত বিশটি নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদবির ক্ষেত্রে এই সমর্থনটি হিলারিকে দিয়েছে। একইভাবে জুলাই মাসে ‘যোগ্যতা ও সক্ষমতার ন্যূনতম অস্বীকৃতির আগে’ টেক্সাসের অপর বহুল প্রচারিত দ্য হিউস্টন ক্রনিক্যাল ট্রাম্পের পরিবর্তে হিলারিকে সমর্থন জানায়। তারা ২০০৮ সালেও ডেমোক্রেট দলীয় বারাক ওবামাকে সমর্থন দিয়েছিল।
তথাপি রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও যুক্তরাষ্ট্রের উল্লেখযোগ্য কোনো পত্রিকার সমর্থন অর্জন করতে পারেননি। অথচ লিবারাটারিয়ান দলের প্রার্থী গ্যারি জনসনকে রিচমন্ড টাইমস ডিসপ্যাচ ও উইনস্টন-সালেম জার্নালের কিছু সম্পাদক সমর্থন জানিয়েছেন।
প্রশ্ন হচ্ছেÑ বাস্তবে পত্রিকার এই সমর্থন কি যুক্তরাষ্ট্রে কোনো প্রভাব ফেলতে সচেষ্ট? গবেষণায় দেখা গেছে, ২০০৮ সালে পিউ রিসার্চ সেন্টারের জরিপে স্থানীয় পত্রিকার সমর্থন কোনোই ভূমিকা রাখেনি। কিন্তু ২০১১ সালের ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনমিকের জরিপে সেই ধারণাটি ভ্রান্ত প্রতিপন্ন হয়, বরং গতানুগতিকতার বাইরে পত্রিকাগুলোর এ সমর্থন যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে সচেষ্ট। সেক্ষেত্রে কনজারভেটিভ বা রক্ষণশীল পত্রিকাগুলোর রিপাবলিকানের চেয়ে ডেমোক্রেট প্রার্থীর প্রতি সমর্থন যথেষ্ট গুরুত্ববহ। তেমনিভাবে বামপন্থী পত্রিকার সমর্থন রিপাবলিকান দলের জন্য ফলপ্রসূ ফলাফল বয়ে আনে।
ওই বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রের ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে নিউইয়র্ক টাইমসের তুলনায় সিনসিনাটি ইনকোয়ারের সমর্থন হিলারি ক্লিনটনের জন্য যথেষ্ট ফলোৎপাদক ভূমিকা রাখতে সচেষ্ট। পাশাপাশি সিনসিনাটির ওহাইও অঙ্গরাজ্যটি হচ্ছে ‘সুয়িং স্টেট’ বা ভোটের ক্ষেত্রে ‘সিদ্ধান্তহীন রাজ্য’।
ই-মেইল : নঁশযধৎর.ঃড়ৎড়হঃড়@মসধরষ.পড়স