তথ্য অধিকার আইন : প্রাসঙ্গিক ভাবনা
রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থায় আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করা একটি কল্যাণ রাষ্ট্রের জন্য অপরিহার্য। এগুলো নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন অবাধ তথ্য প্রবাহ। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে চিন্তা, বিবেক ও বাক-স্বাধীনতা নাগরিকের অন্যতম মৌলিক অধিকার। তথ্য প্রাপ্তির অধিকার চিন্তা, বিবেক ও বাক-স্বাধীনতার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে গণ্য। তথ্য অধিকারকে জনগণের ক্ষমতায়নের একটি মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং জনগণের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং সরকারি বা বিদেশি অর্থায়নে সৃষ্ট ও পরিচালিত বেসরকারি সংস্থাসমূহের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করা সম্ভব। রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সুসংহত করার লক্ষ্যে জনগণের তথ্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বিধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ফসল। বাংলাদেশের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে জনগণের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করার জন্য দেশে তথ্য অধিকার আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে আসছিল। ১৯৮৩ সালে তথ্য অধিকার আইনের পক্ষে প্রেস কমিশন সুপারিশ প্রণয়ন করে। পরবর্তীতে আইন কমিশনের কার্যপত্রের সূত্র ধরে বাংলাদেশে সিভিল সোসাইটির পক্ষ থেকে তথ্য অধিকার আইনের দাবি জোরদার হতে থাকে। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, সুশীল সমাজ, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া প্রভৃতি এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা
পালন করে। এরই ধারাবাহিকতায় আইন কমিশন বিভিন্ন দেশের আইন পর্যালোচনা করে তথ্য অধিকার আইনের একটি খসড়া সরকারের নিকট পেশ করে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিদ্যমান তথ্য অধিকার আইনসমূহ পর্যালোচনা করে এবং দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে মতামত নিয়ে সচিব কমিটি এবং উপদেষ্টা পরিষদের সুপারিশের ভিত্তিতে তথ্য অধিকার অধ্যাদেশ চূড়ান্ত করা হয়। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২০ অক্টোবর, ২০০৮ তারিখে ‘তথ্য অধিকার অধ্যাদেশ, ২০০৮’ জারি করা হয়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নির্বাচিত সরকার ‘তথ্য অধিকার অধ্যাদেশ, ২০০৮’কে আইনে পরিণত করার উদ্যোগ নেয় এবং ৯ম জাতীয় সংসদের ১ম অধিবেশনে যে কয়টি অধ্যাদেশ আইনে পরিণত হয় তার মধ্যে ‘তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯’ অন্যতম। উক্ত অধিবেশনে ২৯ মার্চ, ২০০৯ তারিখে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ পাস হয়। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ৫ এপ্রিল, ২০০৯ তারিখে এ আইনটিতে সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেন এবং ৬ এপ্রিল, ২০০৯ তারিখে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত হয়। তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর ১১(১) উপ-ধারার বিধান মতে আইন জারির ৯০ দিনের মধ্যে গত ১ জুলাই, ২০০৯ তারিখে প্রধান তথ্য কমিশনার ও ২ জন তথ্য কমিশনার তন্মধ্যে একজন মহিলা সমন্বয়ে তথ্য কমিশন গঠন করা হয়। সরকারের এই আন্তরিক সদিচ্ছা ও সাহসী উদ্যোগ দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে এবং এর মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।
তথ্য অধিকার আইনের আওতায় জনসাধারণকে তথ্য প্রদানের সাধারণ বিধান হলো প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি দপ্তরে একজন করে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তথ্য প্রদানের জন্য নিয়োজিত থাকবেন যিনি জনগণের আবেদনের প্রেক্ষিতে আইনের বিধান ও ব্যতিক্রমসমূহ অনুসরণপূর্বক কাক্সিক্ষত তথ্য নির্ধারিত ফি গ্রহণপূর্বক সরবরাহ করবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অনুরোধ প্রাপ্তির তারিখ হতে অনধিক ২০ (বিশ) বা ক্ষেত্রমত ৩০ (ত্রিশ) কার্য দিবসের মধ্যে অনুরোধকৃত তথ্য সরবরাহ করতে ব্যর্থ হলে আপিল কর্তৃপক্ষের নিকট আপিল এবং সেক্ষেত্রেও সংক্ষুব্ধ হলে তথ্য কমিশনে অভিযোগ দায়ের করা যাবে। তথ্য কমিশন দেওয়ানি আদালতের ক্ষমতা প্রয়োগ করে সমন জারি ও শুনানি গ্রহণ এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া অনুসরণ পূর্বক অভিযোগ নিষ্পত্তি করে থাকে। তবে জনগণের অনুরোধে তথ্য সরবরাহের জন্য প্রতিটি দপ্তর যথাযথ প্রক্রিয়ায় তথ্য সংরক্ষণ করবে এবং তথ্য প্রাপ্তির অনুরোধ ছাড়াও স্ব-প্রণোদিতভাবে তাদের কর্মকা- জনসাধারণকে অবহিত করার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্য প্রকাশ ও প্রচার করবে। বাংলাদেশের তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ নানা কারণে বৈশিষ্ট্যম-িত। বাংলাদেশের তথ্য অধিকার আইনে দেওয়ানি আদালতের মতো তথ্য কমিশন কোনো ব্যক্তিকে কমিশনে হাজির করার জন্য সমন জারি এবং শপথপূর্বক মৌখিক বা লিখিত সাক্ষ্য প্রমাণ, দলিল বা অন্য কোনো কিছু হাজির করতে বাধ্য করার আদেশ দিতে পারবে। দোষী প্রমাণিত হলে তথ্য কমিশন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জরিমানা করতে পারবে, তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশ করতে পারবে এবং উপর্যুক্ত ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের আদেশও দিতে পারবে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে তথ্য কমিশন তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়ন তথা তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে সাধ্যমতো প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তথ্য অধিকার আইনের বার্তা ব্যবহার ও তার সুফল সম্পর্কে সর্বসাধারণকে অবহিত করার জন্য সারাদেশে পর্যায়ক্রমে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জনঅবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মন্ত্রণালয়, বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তথ্য অধিকার আইন বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণ ভিডিও, ডকুমেন্টারি ও টিভি ফিলার নির্মাণ করে প্রচার করা হচ্ছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পাঠ্য-সূচিতে তথ্য অধিকার আইন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তথ্য অধিকার আইন পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে এবং ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ তদানুরুপ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। দেশের সকল জেলায় একযোগে আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস উদযাপন এবং কমিশনে প্রাপ্ত অভিযোগসমূহ নিষ্পত্তি ছাড়াও তথ্য কমিশন ইতোমধ্যে সাতটি বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
তথ্য কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমের মধ্যে মৌলিক কাজ হলো অভিযোগ গ্রহণ ও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ। ২০১৫ সালে তথ্য কমিশনে ৩৩৬টি অভিযোগ দাখিল হয়েছে যার মধ্যে ২৪০টি অভিযোগ শুনানির জন্য গ্রহণ করা হয়। ২৪০টি অভিযোগ পর্যালোচনায় দেখা যায় প্রায় ৬৭% সাধারণ নাগরিক, অভিযোগ দায়ের করেছেন, ১৭% সাংবাদিক, ১০% চাকুরিজীবী, ৩% শিক্ষক, ২% আইনজীবী ও ১% মুক্তিযোদ্ধা অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ থেকে বোঝা যায় যে, এ আইনটি সাধারণ জনগণ বেশি ব্যবহার করছেন। অনেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় অভিযোগ দায়ের করে থাকেন। বিশেষ করে দারিদ্র্য ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠির ব্যক্তিগত উদ্যোগে অভিযোগ দায়েরের সংখ্যা সীমিত। তারা বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও আইন সম্পর্কে সচেতন নাগরিকের সহায়তায় অভিযোগ দায়ের করছেন। ফলে দারিদ্র্য ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠি তাদের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রাষ্ট্রের মূল স্রোতধারায় সামিল হতে পারছেন।
এছাড়া মোট ৩৩৬ জন অভিযোগকারীদের মধ্যে প্রায় ৮৮% অভিযোগকারী পুরুষ এবং ১২% অভিযোগকারী নারী। বাংলাদেশের ৬০-৭০% মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন নয়। বিশেষ করে দেশের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠি নারী হলেও তারা এ আইন সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন নয়। এ কথা অনস্বীকার্য যে, নারীরা পুরুষের তুলনায় তথ্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত। ফলে তাদের ক্ষমতায়নের পথ সুগম হচ্ছে না। তবে আশার কথাÑ পূর্বের তুলনায় নারী অভিযোগকারীর সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ছে। তথ্য অধিকার আইন ব্যবহার করে তথ্য প্রাপ্তির আবেদন, আপিল আবেদন ও অভিযোগ দায়ের করে তারা তথ্য প্রাপ্ত হচ্ছেন, ফলে কেবল মাত্র দরিদ্র নারীরাই নয়, বিভিন্ন শ্রেণী, ধর্ম এবং আদিবাসী নারীরা নির্বিশেষে সকল নারী তাদের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তথ্য অধিকার আইন ব্যবহার করতে পারেন।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের তথ্য অধিকার আইন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, যে তথ্য অধিকার আইন রাতারাতি প্রণয়ন করে এর বাস্তবায়ন করা যায়নি। এরজন্য প্রয়োজন হয়েছে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করাসহ মানুষের মধ্যে এই আইনের তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক দিক সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করা। যেমন যুক্তরাজ্যে সেদেশের জনগণের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে ২০০০ সালে ‘ঋৎববফড়স ঙভ ওহভড়ৎসধঃরড়হ অপঃ, ২০০০’ পার্লামেন্ট দ্বারা গৃহীত হলেও আইনটি পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যকর হয় ২০০৫ সাল থেকে। ভারতে এই আইনটি ১৫ জুন ২০০৫ সালে পার্লামেন্ট দ্বারা গৃহীত হয়, তবে সবগুলো ধারা কার্যকর করা হয় ১২ অক্টোবর ২০০৫ তারিখ থেকে। এইভাবে কিছু ধারা একটা নির্দিষ্ট সময় পরে কার্যকর করার মূল লক্ষ্য হচ্ছে আইনটি যথাযথ সুষ্ঠু প্রয়োগ ও বাস্তবায়নে যাঁরা তথ্যপ্রদানকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, তাঁদের জন্য তথ্য সংরক্ষণ ও সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিমূলক সুযোগ তৈরি করে দেওয়া। তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রস্তুতিমূলক কাজগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হচ্ছেÑ তথ্যপ্রাপ্তির জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে যার কাছে তথ্য চাওয়া হবে তিনি যেন চাহিত তথ্য সুনিয়ন্ত্রিত উপায়ে দিতে পারে এবং সেগুলো ঠিকমতো গুছিয়ে রাখতে পারে সেই কাজগুলো সম্পন্ন করা।
যারা তথ্য অধিকার আইনের সফল প্রয়োগ ও এর কার্যকারিতার ওপর সজাগ দৃষ্টি রাখেন, তাঁরা আইনের যথাযথ বাস্তবায়নের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। যেকোনো আইনের পদ্ধতিগত মসৃণতা ও সফল প্রয়োগই এর অস্তিত্বকে আরো অর্থবহ করে তোলে। আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন না হলে আইনের অস্তিত্বকে ম্লান ও অর্থহীন করে তোলে।
বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার অভিযোগকারী অন্যান্য তথ্যের সঙ্গে বিশেষ করে ভূমি ব্যবস্থাপনা, সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প সম্পর্কিত এবং সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্যের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট তথ্য প্রাপ্তির আবেদন দাখিল করছেন। জনগণের ভূমির সঙ্গে সম্পৃক্ততা বেশি থাকার কারণে তথ্য অধিকার আইন ব্যবহার করে ভূমি খাতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হচ্ছে এবং তথ্য প্রাপ্তির মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের স্বচ্ছতা নিশ্চিত হচ্ছে ও দুর্নীতি কমে আসছে। ভূমি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত তথ্য যেহেতু বেশি চাওয়া হচ্ছে সেহেতু এর সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ আইন সম্পর্কে সচেতন করার জন্য এবং জনগণ যেন দ্রুত ও সহজে যাচিত তথ্য পেতে পারে সে বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
তথ্য অধিকার আইন সার্বিকভাবে বাস্তবায়নের ফলে একজন সরকারি কর্মকর্তার দাপ্তরিক ক্ষমতা বা সক্ষমতা কীভাবে বৃদ্ধি পায় তার প্রকাশ পাওয়া যায় যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলায় একসময় কর্মরত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব শরীফ নজরুল ইসলামের একটি লেখা হতে যা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এবং এমআরডিআই এর যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত “তথ্য প্রকাশ” নামে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট ইউএনও এর বক্তব্য ঠিক এরকম “তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ সরকারি কর্মকর্তাদের দাপ্তরিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে। তাঁকে দুর্নীতিমুক্ত হয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করার পরিবেশ দিয়েছে। তাঁকে প্রভাবশালীদের চাপমুক্ত করেছে। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত প্রদান ও ন্যায়বিচার করার হাতিয়ার উপহার দিয়েছে। আমি মনে করি, তথ্য প্রদান করা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা উচিত। এই আইনের ব্যবহার বৃদ্ধি করা উচিত। জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ মিলে ব্যাপক প্রচার চালানো উচিত। তাহলে সরকারের উচ্চ পর্যায়সহ সর্বত্র জবাবদিহি নিশ্চিত হবে। সরকারের উদ্দেশ্য, লক্ষ্য ও জনগণের সেবা নিশ্চিত হবে”।
দেশে বিরাজমান তথ্য অধিকারের সুফল পেতে জনগণকে এ আইনটি সম্পর্কে জানতে হবে; এর প্রয়োগ সম্পর্কে জানতে হবে এবং এর মাধ্যমে নিজেদের ক্ষমতায়নের পথ সুগম করতে এগিয়ে আসতে হবে। তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নের প্রাথমিক দায়িত্ব তথ্য কমিশনের হলেও সমাজের অন্যান্য অংশ তথা বেসরকারি সংস্থা, সুশীল সমাজ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, উচ্চ আদালত এবং সর্বোপরি সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণ অপরিহার্য।
লেখক : সচিব, তথ্য কমিশন