শুধু বার্মা নয় ভারত থেকেও আসছে ইয়াবা
ইসমাঈল হুসাইন ইমু, যশোর থেকে ফিরে : বার্মার পর এবার ভারতের সীমান্ত এলাকায় তৈরি হচ্ছে ইয়াবা। প্রায় প্রতিদিনই সীমান্ত এলাকায় ইয়াবা উদ্ধার হচ্ছে। ভারত সীমান্ত এলাকা থেকে এসব ইয়াবা উদ্ধার হওয়ায় ভাবিয়ে তুলেছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ- বিজিবি কর্মকর্তাদের।
বিজিবির ২৬ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর লিয়াকত জানান, দেশের বেনাপোল সীমান্তে গাঁজা, ফেনসিডিল প্রায় প্রতিদিনই জব্দ করছে বিজিবি। এ বছর ইয়াবাপাচার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। গত বছর এই সীমান্তে ৫০৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়। কিন্তু চলতি বছর এ পর্যন্ত ২৮৫ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। গত ২১ সেপ্টেম্বর ৮শ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে বেনাপোল সীমান্তের দিঘিরপাড় এলাকা থেকে।
বিজিবির দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খলিলুর রহমান বলেছেন, ধারণা করা হচ্ছে ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় ইয়াবা তৈরি হচ্ছে।
বিজিবি ৬-এর ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার কর্নেল আমীর মজিদ বলেন, মাদক ব্যবসায়ীরা নানা কৌশলে তা পাচার করছে। অনেক ক্ষেত্রে মাদক ব্যবসায়ীরা ছোট ছোট প্যাকেট করে ভারত সীমান্ত থেকে কাঁটাতারের ওপর দিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে ছুড়ে দেয়। বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে তা নিয়ে যায় এপারের মাদক ব্যবসায়ীরা।
ইয়াবা সম্পর্কে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন থেকে আমরা লক্ষ্য করছি ভারত সীমান্ত দিয়ে যে ইয়াবা আসছে তা মিয়ানমারের ইয়াবার মতো না। এই ইয়াবার দাম তুলনামূলক কম। যে কারণে এর চাহিদা বেশি বলে মনে করেন তিনি। তার ধারণা ভারতেই এটি তৈরি হচ্ছে। তবে এখন আগের মতো চোরাচালান হচ্ছে না বলে দাবি করেন এ কর্মকর্তা। কর্নেল আমীর মজিদ জানান, ২০১০ সাল থেকে বিজিবি-বিএসএফ যৌথ টহল দিচ্ছে। যৌথ টহলের কারণে মাদকসহ চোরাচালান আগের চেয়ে কমেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রতিদিন বিজিবি-বিএসএফ যৌথ টহল দেয়। আর দুপাড়ের মাদক ব্যবসায়ীরা এই টহলের অপেক্ষায় থাকেন। একবার টহল দেওয়া হলে আধ ঘণ্টার মধ্যে আর কোনো টহল চলে না। এ সুযোগেই চলে মাদক চোরাচালান। ভারতের শাখড়া সীমান্ত থেকে এলাকার ইছামতি নদীর ওপাড় (ভারত) থেকে মাদকবাহী নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে স্রোতের টানে এক পর্যায়ে এপাড় চলে এলে সেখান থেকে মাদক নিয়ে আবারও ছাড়া হয় ওই নৌকা। এই নৌকাটিই আবার ওপাড়ের মাদক ব্যবসায়ীরা কৌশলে নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে নেন। এছাড়া রাতে গরু পাচারের সময় গরুর শরীরেও বেঁধে দেয়া হয় ইয়াবার ব্যাগ। পাশাপাশি ক্ষুদ্রাস্ত্র ও ফেনসিডিলও চোরাচালান হয় এই সীমান্ত থেকে। তবে ইয়াবার চালান বেশি আসছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। সম্পাদনা: আজাদ হোসেন সুমন