মোহাম্মদ আলী বোখারী, টরন্টো থেকে বিতর্কে হিলারি বিজয়ী : ‘সিএনএন-ওআরসি’ জরিপ
যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হিলারি-ট্রাম্প প্রথম বিতর্কে টেলিভিশন নেটওয়ার্ক ‘সিএনএন’ ও আন্তর্জাতিক মার্কেট রিসার্চ সংস্থা ‘ওআরসি’ তাদের যৌথ জরিপে হিলারি ক্লিনটনকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে। এতে নিউইয়র্কের হ্যামস্টিডে অবস্থিত হফস্ট্রা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিতর্কে রিপাবলিকান দলীয় ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২৭ শতাংশের তুলনায় ডেমোক্রেট দলীয় হিলারি ক্লিনটন ৬২ শতাংশ সমর্থন পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। যদিও ওই ফলাফলে বলা হয়েছে, ২০০৮ সালে বারাক ওবামা ও জন ম্যাককেইনের বিতর্কের চেয়ে এ জরিপে অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগই ছিলেন সাধারণ জনতার চেয়ে ডেমোক্রেট দলীয় সমর্থক।
তথাপি এ ফলাফলের পেছনে তাদের মধ্যকার হাড্ডাহাড্ডি প্রতিদ্বন্দ্বিতার কেন্দ্রবিন্দু হয়েছে- ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেজাজি স্বভাব, কর প্রদানের তথ্য গোপন এবং অতীত বর্ণবৈষম্য ও নারীদের প্রতি অশোভন মন্তব্যের কারণে হিলারি ক্লিনটন তাকে কোণঠাসা করেছেন।
অথচ ডেমোক্রেটিক কনভেনশন শেষে আধিপত্যপূর্ণ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে হিলারির সবটাই কয়েক সপ্তাহের মাঝেই যেন উবে যায়। পক্ষান্তরে ট্রাম্প হয়ে ওঠেন অপ্রতিরোধ্য এবং একেবারে মুখোমুখি। সেই ট্রাম্পই সোমবার বিতর্কে হিলারির হাস্যোজ্জ্¦ল অভিব্যক্তির কাছে কঠোর সমালোচনা করেও নিরুপায় হন। পক্ষান্তরে হিলারি তার সেরা, সুদৃঢ় ও চৌকষ অবস্থানটি তুলে ধরতে সক্ষম হন। হিলারি বিতর্কের একপর্যায়ে বলেন, ‘মনে হয় বিতর্কে আমার প্রস্তুতির কারণে ডোনাল্ড সেটিকে বিদ্রƒপই করছেন; এবং সেটাই ঠিক যে, আমি প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি’। তাই ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রশ্ন রেখে হিলারি বলেন, ‘আমি আর কীসের প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি, জানেন? আমি প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি, যা একটি ভালো উদ্যোগ।
যদিও বিতর্কের শুরুতে ট্রাম্প দোদুল্যমান অবস্থান থেকে অর্থনীতি ও কর্মসংস্থান বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জনমানুষের কতিপয় আর্তি তুলে ধরেন। কিন্তু বিতর্কে আইনসংক্রান্ত বিষয়ে, যেমন- পুলিশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষণাবেক্ষণ, ইরাক যুদ্ধে তার সমর্থন ও ওবামার জন্মবিষয়ক ‘বার্থার ষড়যন্ত্রে’ হিলারি জড়িতÑ ট্রাম্পের এমন অসত্য উচ্ছ্বাসপূর্ণ দাবি পর্যুদস্ত হয়। দেখা গেছে, হিলারি তাকে বারংবার সংশোধনের ক্ষেত্রে তার ওয়েবসাইটের ‘ফ্যাক্ট-চেক’ করতে বলেন। আর তখনই ক্রমান্বয়ে রাগান্বিত ট্রাম্প আমেরিকার শত্রু আইএসআইএস দমনে হিলারির ওয়েবসাইটে পরিকল্পনা থাকাকে ‘আভাস’ দেওয়া হয়েছে বলে জানান। প্রত্যুত্তরে হিলারি এ বিষয়ে ট্রাম্পের আগের ‘গোপন’ পরিকল্পনা রয়েছে সেটির সমালোচনায় বলেন, অন্তত আইএসআইএস প্রতিরোধে আমার পরিকল্পনা রয়েছে, আপনারটা কী জানা যায়নি।
তবে এই বিতর্কের আগে সোমবার প্রকাশিত সিএনএন-ওআরসির অপর এক জরিপে জাতীয়ভাবে যুক্তরাষ্ট্রে হিলারি-ট্রাম্প প্রায় হাড্ডাহড্ডি লড়াই অর্থাৎ ৪৪%-৪২% জনসমর্থনের সম্মুখীন। নির্বাচনের ৪৩ দিন আগে এই জনসমর্থনের ক্ষেত্রে হোয়াইট হাউসে যেতে হলে হিলারির প্রত্যাশা ২৭০ ইলেকটোরাল ভোট এবং তাতে কলোরাডো ও প্যানসেলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বিজয় অর্জন জরুরি। অথচ সর্বশেষ এ দুটি অঙ্গরাজ্যে হিলারি ও ট্রাম্পের জনসমর্থন যথাক্রমে ৪২%-৪১% ও ৪৫%-৪৪%।
ই-মেইল: নঁশযধৎর.ঃড়ৎড়হঃড়@মসধরষ.পড়স