পলাতক নই চিকিৎসার জন্য এসেছি : খোকা
শাহানুজ্জামান টিটু : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা বলেছেন, ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্যে হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে দু’বছর আগে নিউইয়র্কে এসেছি। আমি পলাতক নই।
গত রোববার রাতে এনআরবি নিউজকে প্রদত্ত বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। সুত্র : বিএনপি বাংলাদেশ।
খোকা বলেন, আমার মনে হচ্ছে সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ণভাবে আমার বিরুদ্ধে এসব করছে। তবে আমি সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে হাইকোর্টের মাধ্যমেই প্রকৃত সত্য উদঘাটনে যাবতীয় প্রক্রিয়া অবলম্বন করবো।
গুলশানে ৫ কাঠা জমিসহ ভবন, নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জে ৫০ একর জমি বাজেয়াপ্ত করার পর গাজীপুরের ৬৬.৫৬ একর জমি বাজেয়াপ্ত করায় বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকায় অনেক সড়কের নামকরণ মুক্তিযোদ্ধাদের নামে করেছি। এরমধ্যে আওয়ামী লীগের আব্দুস সামাদ আজাদও রয়েছেন। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বিরুদ্ধেও অবস্থান নেইনি। পাকিন্তান পন্থীও নই। কেন সরকার আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে, তা বুঝতে পারছি না। খোকা বলেন, ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্যে হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে দু’বছর আগে নিউইয়র্কে এসেছি। বর্তমানে নিউইয়র্কে চিকিৎসা চলছে। ইতিমধ্যেই আমার একটি কিডনি ফেলে দিতে হয়েছে। উরুতে অস্ত্রোপচারের পর সম্প্রতি দেড় মাস কাটাতে হয় হাসপাতালে।
বিএনপি নেতা বলেন, তিন সপ্তাহ অন্তর আমাকে থেরাপি নিতে হয়। এটি না নিলে আমি বাঁচতে পারবো না। অর্থাৎ আমি চিকিৎসকের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে রয়েছি। চিকিৎসার যাবতীয় তথ্য আমি আমার আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে প্রদানের চেষ্টা করেছি। নিম্ন আদালতে আমাকে পলাতক দেখিয়ে বিচার করার সময় আমার আইনজীবী কথা বলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। মাননীয় আদালত তার কথা শুনেননি।
খোকা বলেন, মিডিয়ায় আমার বিরুদ্ধে একতরফা রায় প্রদানের সংবাদ দেখে আমি হতভম্ব। আমার মনে হচ্ছে, আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংসের অভিপ্রায়ে এ ধরনের মিডিয়া ট্রায়ালের ঘটনা ঘটছে।
তিনি বলেন, এরশাদের আমলে কমলাপুর থেকে সায়েদাবাদ হয়ে ডেমরা পর্যন্ত যে রাস্তা হয়েছে সেখানে আমারও জমি অধিগ্রহণ করা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৪ সালে রাজউক ক্ষতিগ্রস্ত আরো অনেকের সঙ্গে আমাকেও ৫ কাঠা জমি প্রদান করে। ১৯৯৮ সালে এনসিসি ব্যাংক থেকে প্রথমে এক কোটি টাকা এবং পরবর্তীতে আরো ২৫ লাখ টাকার ঋণ নেই ভবন নির্মাণের জন্যে। খোকা উল্লেখ করেন, ‘১/১১ এর সময়ে আমার সহায়-সম্পদের বিবরণ প্রদানকালে এসব তথ্য উল্লেখ করেছি। কিন্তু মহলবিশেষের প্ররোচনায় ১/১১ কর্তৃপক্ষ ডিডব্লিউডির একজন ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ করেন আমার ঐ ভবনের মোট ব্যয়ের পরিমাণ নির্ধারণের জন্যে।’
এ প্রসঙ্গে খোকা বলেন, আমি নিজের তত্ত্বাবধানে ভবন নির্মাণের সময় সবকিছু দরাদরি করে ক্রয় করি। এরফলে মোটামুটি ডিসকাউন্ট পেয়েছি। কিন্তু পিডব্লিউডি’র ইঞ্জিনিয়ারের স্টেটমেন্টে ভবন নির্মাণের ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। এটিই স্বাভাবিক। কারণ, তাদের নানা বিষয় যোগ করে স্টেটমেন্ট থেরি করতে হয়। এবং সেটিই হয়েছে আমার কাল।
তিনি বলেন, গাজীপুরে যে জমি বাজেয়াপ্ত করার রায় দেখলাম, সেটিও হাস্যকর একটি ব্যাপারে পরিণত হবে। কারণ, বুড়িগঙ্গা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামক কোম্পানির পরিচালক রয়েছেন ৭ জন। মোট সহায়-সম্পদের ৯৭.১৩% এর মালিক হলেন অন্যেরা। আমি মাত্র ২.৮৭% শতাংশ শেয়ারের মালিক ছিলাম। পরবর্তীতে কয়েকজন তাদের শেয়ার বিক্রি করায় আমার মোট শেয়ারের পরিমাণ দাঁড়ায় ২০% এর ও কম। অথচ পুরো সম্পত্তির মালিক হিসেবে আমাকে বিবেচনা করে নিম্ন আদালত ওই রায় প্রদান করলেন, যা সত্যি বিস্ময়ের ব্যাপার। এ কোম্পানির পরিচালকদের একজন লন্ডন, একজন সুইডেন, আরেকজন শিকাগোতে বাস করছেন। তারাও হতবাক।’ সম্পাদনা : পরাগ মাঝি