‘মেডিকেল কোচিং সেন্টার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে’
রিকু আমির: মেডিকেলে ভর্তি হতে কোচিং প্রয়োজন নেই মন্তব্য করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, মেডিকেল কোচিং সেন্টার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। গতকাল বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন। আসন্ন মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে এ মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়।
এ সভায় রেটিনা কোচিং সেন্টার সম্পর্কে অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়। বলা হয়- বরাবরই মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে রেটিনা কোচিং সেন্টার জড়িত বলে অভিযোগ উঠে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না। রেটিনা কোচিং সেন্টারসহ মেডিকেলে ভর্তির জন্য অন্য কোচিং সেন্টার স্থায়ীভাবে বন্ধের দাবি জানানো হয় মতবিনিময় সভায়। সভায় চিকিৎসক ও মেডিকেল কলেজ শিক্ষকরাও প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে যুক্ত থাকেন বলে অভিযোগ করা হয়।
এসব প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, জামায়াত-শিবির পরিচালিত রেটিনা কোচিং সেন্টার সম্পর্কে আমার কাছে আরও আগেও অভিযোগ এসেছে। তারাসহ যেসব মেডিকেল ভর্তি কোচিং সেন্টার প্রশ্ন ফাঁস বা পরীক্ষার জন্য ক্ষতিকর কিছু করলে ছাড় দেয়া হবে না এবং এসব কোচিং সেন্টার বন্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, এবার প্রশ্ন ফাঁস হবার কোনো সুযোগই নেই। কেউ গুজব ছড়ালে আইনের আওতায় আনা হবে।
সভায় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের প্রস্তুতি সম্পর্কে তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, এবার প্রযুক্তির সহায়তা নেয়া হচ্ছে। প্রশ্ন ফাঁস হবার কোনো সুযোগ নেই।
আগামী ৭ অক্টোবরের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষাকে (এমবিবিএস) কেন্দ্র করে গত ২৫ সেপ্টেম্বরই মেডিকেল ভর্তি কোচিং বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা সম্পর্কে মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন) ডা. আবদুর রশিদ বলেন, এবার ফরম বিক্রি হয়েছে ৯০ হাজার ৪২৬টি। গত বছর হয়েছিল ৮৪ হাজার ৪০০। মন্ত্রী নাসিম বলেন, আগামী মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার জন্যে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ লক্ষ্যে শিক্ষক, সাংবাদিকদের নিয়ে বিশেষ কমিটিও গঠন করা হয়েছে। সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও বিতরণ করা হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, অনিয়ম করার অভিযোগে এরই মধ্যে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এতেও অনিয়ম অব্যাহত থাকলে একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শেষ দিকে তিনি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস বা অন্য কোনো ক্ষতিকর কর্মকা-ের সঙ্গে যদি কোনো চিকিৎসকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়, তবে সেই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে- এমন একটি নির্দেশনা জারি করে দেন। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম