রংপুর, বরগুনা ও লক্ষ্মীপুরে ৬ জনের ফাঁসির দ-াদেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক: রংপুরে এক যুগ আগে নিজ শিশু সন্তানকে গলাটিপে হত্যার দায়ে মায়ের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। বরগুনায় নয়া মিয়া হত্যামামলায় ৪ জনের ফাঁসি ও দুজনের যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত ও লক্ষ্মীপুরে পৃথক দুটি হত্যামামলায় গতকাল বুধবার ১৬ জনের যাবজ্জীবন ও ১ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদগুলো তুলে ধরা হলোÑ
মোস্তাফিজার রহমান বাবলু, রংপুর: রংপুরে এক যুগ আগে নিজের শিশু সন্তানকে গলাটিপে হত্যার দায়ে মায়ের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল দুপুরে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবু জাফর মোহাম্মদ কামরুজ্জামান আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। দ-প্রাপ্ত রাহেলা খাতুন (৩০) রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুর পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি ফারুক মোহাম্মদ রেয়াজুল করিম বলেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহের জেরে রাহেলা খাতুন তার এক বছর বয়সী মেয়ে লাকী বেগমকে নিয়ে ২০০৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর বিকেলে তার বাবার বাড়িতে চলে যান। ওই রাতেই লাকীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ বস্তায় ভরে বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দেন রাহেলা। দীর্ঘদিন শিশু লাকীর সন্ধান না পাওয়ায় তার বাবা লাবলু মিয়া একই বছরের ১ অক্টোবর রাহেলাকে আসামি করে গঙ্গাচড়া থানায় হত্যামামলা দায়ের করেন।
বীরেন্দ্র কিশোর, বরগুনা: আমতলী উপজেলার নয়া মিয়া হত্যামামলায় ৪ জনের ফাঁসি ও দুজনের যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে ৩৭৯ ধারায় প্রত্যেক আসামিকে তিন বছরের সশ্রম কারাদ- ও এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেছে বরগুনা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় আদালতে সব আসামির উপস্থিতিতে বরগুনা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুহা. আবু তাহের এ রায় দেন।
আসামিদের মধ্যে মো. শহিদুল চৌকিদার, বারেক চৌকিদার, বশির মাতুব্বর ও মোয়াজ্জেমকে ফাঁসি। অন্য দুই আসামি আ. রব চৌকিদার ও মজিবরের যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছে আদালাত।
২০১২ সালের ১০ এপ্রিল উপজেলার খুড়িয়ার খেয়াঘাটের গরু ব্যবসায়ী নয়া মিয়া ৭০ হাজার টাকা নিয়ে কলাপাড়া থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাকে আটকে আসামিরা নয়া মিয়াকে পাটাপুতা দিয়ে কোমড়ের নিচের দিকে ছেচে থেতলে দেয়। পরে হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
জাহাঙ্গীর হোসেন লিটন, লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে পৃথক দুটি হত্যামামলায় ১৬ জনের যাবজ্জীবন ও ১ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ ড. এ কে এম আবুল কাশেম লক্ষ্মীপুরে সুলতানা বেগম ফেরদৌসী (২৫) নামে এক গৃহবধূকে গলাকেটে হত্যার দায়ে তার দেবর বেলাল হোসেনকে (৩০) মৃত্যুদ- ও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. সাইদুর রহমান গাজী লোকমান হোসেন নামে এক কৃষককে হত্যার দায়ে ১৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদ- ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ প্রদান করেন। এসময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি থানার সবুজ গ্রামে ২০০৯ সালের ২১ জানুয়ারি লোকমান হোসেন কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে সয়াবিন রোপণ করতে গেলে আসামিরা জায়গা-জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে লোকমান হোসেনকে পিটিয়ে এবং কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ ফেব্রুয়ারি মারা যায়।
অপরদিকে ২০১৩ সালের ২৩ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর পৌরসভার লামচরী গ্রামের বড় ভাইয়ের স্ত্রী সুলতানা ফেরদৌস (১৮) কে দুপুরের খাওয়াকে কেন্দ্র করে রান্নাঘরেই দা দিয়ে জবাই করে পালিয়ে যায় তারই দেবর বেলাল হোসেন। এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে ওই রাতে দেবর বেলাল হোসেন, স্বামী মনির হোসেনসহ একই পরিবারের ৬ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি হত্যামামলা দায়ের করে। সম্পাদনা: প্রিয়াংকা