তিনজন মিলে ১ শিশুর জন্ম
নাসিমুজ্জামান সুমন: বিশ্বে এই প্রথম বিজ্ঞানের নতুন এক উপায় ব্যবহার করে এমন একটি শিশুর জন্ম দেওয়া হয়েছে। যার জন্মের পিছনে তিনজন মানুষের ভূমিকা রয়েছে। থ্রি-পারসন ফার্টেলিটি পদ্ধতি চিকিৎসা শাস্ত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। নতুন এই পদ্ধতিতে সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে পিতা-মাতার বাইরেও তৃতীয় ব্যক্তির ডিএনএ ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে মায়ের ভ্রুণের কোনো বিকৃত গঠন ছাড়াই শিশু সুস্থ-সাবলীলভাবে জন্ম নেবে। সম্প্রতি ‘নিউ সাইনটিস্ট’ নামে একটি বিজ্ঞান সাময়িকীতে এ পদ্ধতিতে শিশু জন্মদানের খবর প্রকাশিত হয়। যদিও শিশুটির জন্ম হয়েছে আরও ৫ মাস আগে। ফলে তার বয়স এখন ৫ মাস। সূত্র: বিবিসি বাংলা
শিশুটির জর্ডানিয়ান মায়ের জিনে ছিল বিরল এক রোগের পূর্ব ইতিহাস। তাই এই শিশুটির জিনে যেন সেই রোগের ধারাবাহিকতা না থাকে এ জন্যে পিতা এবং মাতার ডিএন-এর সঙ্গে তৃতীয় একজন দাতার ডিএনএর অংশবিশেষ যুক্ত করে জন্ম দেওয়া হয় শিশুটিকে। এই পদ্ধতি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ থাকায় চিকিৎসা করার জন্য চিকিৎসক ঝ্যাং চিকিৎসাটি করার জন্য চলে গিয়েছিলেন মেক্সিকোতে।
ঝ্যাংয়ের ভাষায়, একটি সুস্থ সন্তান জন্মানোর জন্য মায়ের জঠরে থাকা ভ্রণের কোনো বিকৃত গঠন থাকলে এ পদ্ধতিতে সারিয়ে তোলা সম্ভব। এই শিশুর জন্মদানে মায়ের ডিএনএ’ই ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় একজনের ডিএনএ থেকে কিছু থেকেও কিছু উপাদান ধার নেওয়া হয়েছে।
মানুষের দেহকোষে থাকা ক্ষুদ্রকায় মাইট্রোকন্ডিয়ার কাজ হলো খাদ্যকে ব্যবহারযোগ্য উপাদানে রূপান্তর করা। কিন্তু কিছু মহিলা তাদের মাইট্রোকন্ডিয়ায় বংশপরম্পরায় কিছু বিকৃতি ধারণ করেন। এবং তা তাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে চলে যায়। জর্ডানিয়ান এই পরিবারটির ক্ষেত্রে সমস্যা ছিল, তাদের ডিএনএতে লেস ইনরোমর নামের বিরল এক রোগের ইতিহাস ছিল। যা সন্তান জন্মদানের সময় প্রাণঘাতী হতে পারতো। এর আগেও এই দম্পতির চারবার গর্ভপাতও হয়েছিল। এছাড়া তাদের দুটি সন্তানের মৃত্যুও হয়েছে। তবে সমালোচকরা এই চিকিৎসাকে দায়িত্ব-জ্ঞানহীন বলে বর্ণনা করেছেন।
ঝ্যাং এবং তার দল বলছেন, আগামী মাসে আমেরিকান সোসাইটি ফর রিপ্রোডাক্টিভ মেডিসিনের বৈঠকে তারা যখন তাদের গবেষণার ফলাফল উত্থাপন করবেন তখন তারা এসব সমালোচনার জবাব দেবেন। সম্পাদনা: পরাগ মাঝি