কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারের রামু উপজেলায় কুরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে বৌদ্ধপল্লিতে হামলার চার বছর পরও মামলা গতিশীল না হওয়ায় হাতাশা প্রকাশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। গতকাল বৃহস্পতিবার ঘটনার চার বছর পূর্তি উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তরা তাদের হাতাশার কথা জানান।
রামু উপজেলার হাইটুপি গ্রামের বাসিন্দা উত্তম বড়ুয়ার ফেসবুক পেজে কুরআন অবমাননা করে ছবি পোস্ট করেছেনÑ এ অভিযোগ তুলে ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে ওই গ্রামে সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালিয়ে লুটপাটসহ ১২টি বৌদ্ধ মন্দির ও ৩০টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে একদল লোক।
এ ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ, জেলা জামায়াতের বর্তমান সেক্রেটারি জিএম রহিমুল্লা, সদর উপজেলার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল আলম বাহাদুরসহ দেড় হাজারের বেশি লোককে আসামি করে মামলা হয়।
মামলার পিপি মমতাজ আহমদ বলেন, বৌদ্ধ মন্দির ও পল্লিতে হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ১৮টি এবং ক্ষতিগ্রস্ত একজন আরও একটি মামলা করে। সব মামলায় ইতোমধ্যেই অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। কিন্তু দুটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলেও সাক্ষীদের আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান এবং প্রত্যক্ষদর্শী কোনো সাক্ষী না পাওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাক্ষীদের বৈরী ঘোষণা করা হয়েছে।
হামলায় বিধ্বস্ত হওয়ার পর সরকারি সহায়তায় নবনির্মিত মন্দির হামলায় বিধ্বস্ত হওয়ার পর সরকারি সহায়তায় নবনির্মিত মন্দির ওই দুই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ বন্ধ রেখে আদালত সব মামলা অধিকতর তদন্ত করার জন্য পিআইবিকে নির্দেশ দিয়েছে বলে তিনি জানান।
ইতোমধ্যেই পাঁচ মামলা অধিকতর তদন্তের জন্য পিআইবির কাছে পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান। সীমা বিহারের অধ্যক্ষ ও সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার উপ-সংঘরাজ সত্যপ্রিয় মহাথের বলেন, পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত টহল দিয়ে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। তারপরও হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উর্বর ভূমি রামুতে সাম্প্রদায়িক তা-বের পোড়া ক্ষত বৌদ্ধদের অজানা আতঙ্কে এখনও তাড়িয়ে বেড়ায়। অবিশ্বাস আর সন্দেহের কারণে এখনও নিজেদের পুরোপুরি নিরাপদ মনে করা সম্ভব হচ্ছে না।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ বলেন, রামুর সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনার মামলাগুলো খুবই স্পর্শকাতর। পুলিশ বরাবরই মামলাগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেছে। সাক্ষীরা কেউ আদালতে যেতে ভয় পেলে পুলিশ পাহারায় বাড়ি থেকে আদালতে আনা-নেওয়া করা হবে।
এদিকে ঘটনার চারবছর পূর্তিতে রামু কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ যুবপরিষদ বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে শ্রীকূল লাল চিং চত্বরে। সম্পাদনা: প্রিয়াংকা