কেআইবির কনফারেন্সে রাষ্ট্রপতি জলবায়ু পরিবর্তনে কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়
এস.ইসলাম জয়: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রন্ত না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখার তাগিদ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তিত পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর জন্য কৃষকদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। কৃষির সঙ্গে বাংলাদেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ও কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন বিষয় সম্পৃক্ত।
গতকাল বৃহস্পতিবার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে বাংলাদেশের পঞ্চম জাতীয় কনভেনশন ও আন্তর্জাতিক কৃষি কনফারেন্স অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেআইবির সভাপতি ও কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি। লিখিত বক্তব্যের বাইরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, আমি কৃষকের সন্তান, তাই কৃষিবিদদের অনুষ্ঠানে আসতে ভালো লাগে।
এ দেশ কৃষি নির্ভর তাই কৃষক দেশের প্রাণ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রতিকূল জলবায়ু সহনশীল শস্যের বিভিন্ন জাত উদ্ভাবনের উপর গুরুত্ব এবং কৃষি সহায়ক শিল্পপ্রতিষ্ঠাসহ কৃষির বহুমুখী উৎপাদন বাড়াতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করে তুলতে হবে।
রাষ্ট্রপতি তার বক্তব্যে বলেন, প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমি দেশের কৃষিবিদ, কৃষিবিজ্ঞানী, সম্প্রসারণ কর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানাই। বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্য চাহিদা পূরণের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনে সৃষ্ট পরিস্থিতি দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করা কৃষির সামনে ‘বড় চ্যালেঞ্জ’।
কৃষি উৎপাদন ও বিপণনে পণ্যের বহুমুখীকরণের উপর গুরুত্ব দিয়ে কৃষিবিদদের উদ্দেশে আবদুল হামিদ বলেন, উন্নয়ন ও উদ্ভাবন চলমান প্রক্রিয়া। তাই আপনাদেরও উদ্ভাবনী ও গবেষণা প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে। কৃষি খাতের অর্জিত সাফল্য ধরে রাখতে হলে কৃষি উৎপাদন ও বিপণনে বহুমুখীকরণের বিকল্প নেই।
কৃষির উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন কর্মসূচির কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, কৃষির ক্রমবর্ধমান উৎপাদনের ধারাকে অব্যাহত রাখতে সরকার উন্নতজাতের বীজ উৎপাদন ও সরবরাহ, কৃষি উপকরণে প্রণোদনা, সুষম সারের ব্যবহার নিশ্চিত করা, কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড প্রবর্তন ও কৃষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, সহজ শর্তে কৃষি ঋণ সরবরাহ, কৃষি গবেষণা, কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবনসহ বহুমুখী কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। আমি জেনে খুশি হয়েছি, বর্তমানে বিশ্বে ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ এবং সবজি উৎপাদনে তৃতীয়।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য দারিদ্র্যতা হ্রাস করে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলা। সমাপনী বক্তব্যে বলেন, আমি এখনই গ্রামে যাব হাওর ও কৃষকের কাছে। তাই আপনাদের সাথে বেশিক্ষণ থাকতে পারছি না।
অন্যানের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হক, কেআইবির মহাসচিব মোহাম্মদ মোবারক আলী, প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, কৃষি সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি মাইক রবসন ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এ সাত্তার ম-লসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনায়: শাহানুজ্জামান টিটু