পরাগ মাঝি : আপনি যদি আপনার প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট সিঁড়ির প্রথম ধাপে কিছুটা সময় ব্যয় করেন তবে সবচেয়ে বেশি বেতন নেওয়া আপনার কর্মচারীরা আদতে কী করছে তা দেখে সম্ভবত অবাক হয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে আপনি যা জানবেন তা হলো- আপনার মধ্যম সারির কর্মকর্তারা করার মধ্যে কেবল অকর্মই করছে। সম্প্রতি নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্ফিত পদস্থ কর্মকর্তারা তাদের পেছনে খরচের তুলনায় কোম্পানিতে খুব কমই যোগ করেন।
হার্ভার্ডের ব্যবসায়িক পর্যালোচনাবিষয়ক এক নিবন্ধে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান কর্মক্ষেত্র পরিস্থিতিতে প্রতি পাঁচজনে অন্তত একজন অতিরিক্ত হিসেবে কোম্পানিতে কাজ করছে। অন্যান্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এ পরিসংখ্যানটা বর্তমানে বেশি।
বৃহস্পতিবার ‘স্যালোন’র প্রতিবেদনে জানানো হয়, ক্যালিফোর্নিয়ার ‘ম্যানেজম্যান্ট ল্যাব’-এর প্রতিষ্ঠাতা গ্যারি হামেল ও বোস্টনকেন্দ্রিক ম্যানেজম্যান্ট ইনোভেশন এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা মিচেল জ্যানিনির গবেষণা অনুযায়ী, কর্মক্ষেত্রে থার্ডপার্টি হিসেবে যেসব কর্মকর্তা রয়েছে তাদের চাকরিচ্যুত করলে কোম্পানির তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। গ্যারি এবং মিচেল মনে করেন, এই উপায়ে বরং কোম্পানির কর্ম পরিবেশের উন্নয়ন ঘটে।
গত শতাব্দীর ৮০-র দশক থেকে কিছু কোম্পানির সার্বিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে মানবসম্পদ নথিকে পরিপূর্ণতা দিতে কর্মচারী সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। গ্যারি ও মিচেলের ইউএস ব্যুরো অব ইকোনমিক্সের ডাটা অনুযায়ী, বিভিন্ন শ্রেণিভুক্ত কর্মচারীর নতুন পদের সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
আমলাতন্ত্রবিরোধী এ দুই গবেষক খুঁজে পেয়েছেন, আমেরিকার কর্মক্ষেত্রে প্রতি চার থেকে পাঁচজন কর্মীর জন্য একজন পরিচালক রয়েছেন। এটা বলাই বাহুল্য যে, এ প্রতিবেদনের দূরদর্শিতা থেকে এটাই বোঝা যাচ্ছে, দেশটির প্রায় ২১ মিলিয়ন কর্মচারী নেহাত অব্যবহৃতই থেকে যাচ্ছে। কোম্পানিগুলো সত্যিকার অর্থেই আরও উৎপাদনশীল হবে যদি তাদের এ ধরনের বিশ্রামাগারগুলো নির্মূল করেন।
গ্যারি এবং মিচেলের মতে, সুপারভাইজারদের বরং উৎপাদনশীল কাজের দিকে ধাবিত করলে দেশের জিডিপিতে আরও প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন ডলার যোগ হতো।
দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদনশীলতা কিছু সুনির্দিষ্ট সময়ে সাম্প্রতিক দশকগুলোর চেয়ে ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে এমনটা হচ্ছে অধঃস্তন কর্মচারীদের মধ্যে। ইকোনমিক পলিসি ইনস্টিটিউটের এক জরিপ অনুযায়ী, ১৯৭৩ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে সুপারভাইজার নয়Ñ এমন কর্মচারীদের মধ্যে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, উৎপাদনের এ অভ্যুত্থানে সুপারভাইজাররা তেমন ভূমিকা রাখেনি, রেখেছে প্রযুক্তি। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম