বাবা-মায়ের লড়াইতেও অটুট হিলারি ট্রাম্পকন্যার বন্ধুত্ব
লিহান লিমা: মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার লড়াইয়ে মাঠে নেমেছেন হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। মজার বিষয় হলো, বাবা-মায়ের লড়াইয়ের প্রভাব পড়েনি ক্লিনটনকন্যা চেলসি ক্লিনটন ও ট্রাম্পকন্যা ইভানকা ট্রাম্পের পুরনো বন্ধুত্বে। দুই দলের ক্যাম্পেইন থেকেই ইভানকা ও চেলসিকে তাদের বন্ধুত্ব ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচন শেষ হওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখতে বলা হলেও সেটি করেননি তারা। যদিও দুজনেই তাদের বাবা-মাকে সমর্থন করে যাচ্ছেন। হিলারির প্রতি ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক মন্তব্যের পরও ইভানকার প্রতি বন্ধুত্বে এতটুকু ঘাটতি পড়েনি চেলসির। এ বছরের জানুয়ারিতে চেলসি ইভানকাকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘দুই বন্ধুর বাবা-মায়ের রাজনৈতিক যুদ্ধের প্রভাব যেন তাদের উপর না পড়ে।’ মার্কিন গণমাধ্যম ডেইলি নিউজের খবরে বলা হয়, সাবেক ফার্স্ট ডটার চেলসি ছোটবেলা থেকেই রাজনৈতিক পরিবারে বড় হয়েছেন। বাবা-মা দুজনের বিরাট রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের সুবাদে চেলসির রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা অনেক। তাই তিনি রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে কখনই ব্যক্তিগতভাবে নিবেন না।
অন্যদিকে ইভানকা একজন সফল ব্যবসায়ীর কন্যা। মার্কিন এক টিভি সাক্ষাৎকারে তাদের বন্ধুত্ব নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘চেলসি আমার খুব ভালো বন্ধু। তবে এটি খুবই স্বাভাবিক যে সে তার বাবাকেই সহায়তা করবে।’
চেলসি পিপল ম্যাগাজিনকে বলেন, ‘আমি অনেক কৃতজ্ঞ যে ইভানকাকে বন্ধু হিসেবে পেয়েছি। সে একজন নারী হিসেবে অসাধারণ। আমি তাকে সমর্থন করি যেমন আমার অন্য সব বন্ধুকে। আর বন্ধুত্ব রাজনীতির চেয়ে অনেক বড়।’এর জবাবে ইভানকা তার টুইটারে মজা করে বলেন, ‘জ্ঞানের কথা’। অবশ্য ইভানকা স্বীকার করে নেন যে আগের মতো সময় একে অপরকে দিতে পারছেন না তারা। বলেন, যখন সারা বিশ্বের মানুষ টিভিতে আমাদের বাবা-মাকে একে অপরের বিরুদ্ধে বাক্যবাণ ছুঁড়তে দেখবে। তখন আমরা নিশ্চয়ই একসঙ্গে ড্রিংকস করতে যেতে পারব না।
দুই বন্ধুই একে অপরের সঙ্গে রাজনৈতিক বিষয়ে খোলাখুলি আলোচনা করেন। প্রায় এক সপ্তাহ আগে মার্কিন সাংবাদিক ম্যাট লয়্যারকে চেলসি বলেন, ‘আমি ইভানকার সঙ্গে ‘ডটার সামিট’ এ বসার কথা ভাবছি এবং দুই পার্টির ক্যাম্পেইনে একে অন্যকে আঘাত করে যেসব কথা বলা হয় সে বিষয়গুলো বন্ধ করা নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত নেব।’ লয়্যারার সঙ্গে আলোচনায় চেলসি আরও বলেন, ‘ডোনাল্ডের বর্ণবাদী এবং উগ্র মন্তব্যের জন্য ইভানকার সব-সময় তাকে রক্ষা করা উচিত নয়।’
এপ্রিলে চেলসি বলেন, ডোনাল্ডের নির্বাচনি ক্যাম্পেইনের দিকে তাকালে দেখা যায়, সেখানে প্রতিনিয়ত বর্ণবাদ, লিঙ্গবৈষম্য, শ্রমিকবিরোধী, অভিবাসনবিরোধী কথাবার্তা। এটি সেই আমেরিকা নয় যেখানে আমি আমার সন্তানকে বড় করতে চাই। আরএনসি বক্তৃতায় ইভানকা যখন ট্রাম্পকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলেছেন, তারা বাবা নারীদের সমানভাবে মূূল্যায়ন করেন এবং শিশুদের যতেœ অনেক সতর্ক। এর উত্তরে চেলসি খুব সাধারণ প্রশ্ন করে বলেন, কিভাবে তোমার বাবা এটি করেন?
উল্লেখ্য, ইভানকা ও চেলসি দুজনেই বিবাহিত এবং নিউইয়র্কে নতুন মাতৃত্বের স্বাদ গ্রহণ করেছেন। দুজনেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে নতুন মায়ের দায়িত্ব সম্পর্কে নানা বিষয় শেয়ার করেছেন। চেলসি জুনে তার দ্বিতীয় সন্তান ও ইভানকা মার্চে তার তৃতীয় সন্তানকে স্বাগত জানিয়েছেন।