আজাদ হোসেন সুমন: দেশে চালু থাকা তিনটি বেসরকারি এয়ারলাইন্স যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা। এগুলো হচ্ছে- ইউএস-বাংলা, নভোএয়ার এবং রিজেন্ট এয়ারওয়েজ।
সরকারের অসহযোগিতা ও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে দেড়যুগে বন্ধ হয়েছে ৭টি বেসরকারি এয়ারলাইন্স। অব্যাহত লোকসানের মুখে থাকা এসব এয়ারলাইন্সের ব্যাপারে বিমানমন্ত্রণালয় রহস্যজনক নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের অসহযোগিতা, অপরিকল্পিত রুট বিন্যাস, এভিয়েশন ব্যবসা সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণার অভাবেই এমনটি হয়েছে। জরুরিভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে খুড়িয়ে চলা বাকি এয়ারলাইন্সও বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। অ্যারো বেঙ্গল নামে একটি বেসরকারি এয়ারলাইন্স ১৯৯৬ সালে চালু হয়ে এক বছরের মাথায়ই বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ১৯৯৭ সালে চালু হওয়া ‘এয়ার পারাবাত’ বন্ধ হয় পাঁচ বছরের মাথায়। আর ‘বেস্ট এভিয়েশন’ নামে একটি এয়ারলাইন্স চালু হয়ে তিন বছরের মাথায় তল্পি-তল্পা গুটাতে বাধ্য হয়। ২০০৫ ও ২০০৭ সালে চালু হয় এয়ার বাংলাদেশ এবং রয়েল বেঙ্গল এয়ারলাইন্স। কিন্তু না, সুবিধা করতে না পেরে বন্ধ হয় তিন বছরের মাথায়। ২০০৭ সাল থেকে অপারেশনে থাকা ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ বন্ধ হয়ে যায় ২০১০ সালে।
বেসরকারি এয়ারলাইন্সের জগতে আলোচিত নাম জিএমজি। কিন্তু এই জিএমজিও আগের এয়ারলাইন্সগুলোর মতো করুণ পরিণতি বরণ করতে বাধ্য হয়। জিএমজি এয়ারলাইন্স ১৯৯৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সুনামের সঙ্গে ব্যবসা অব্যাহত রাখলেও ২০১২ সালে তারা আর পথ চলতে পারেনি। মূলত জ্বালানির দাম বৃদ্ধির কারণেই তারা উড়োজাহাজ চলাচল স্থগিত রেখে নতুন ব্যবসায়িক কৌশল নির্ধারণ করছে। ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সটির বিরুদ্ধে সিভিল এভিয়েশনের পাওনা টাকা পরিশোধ না করে উল্টো সংস্থাটির বিরুদ্ধে মামলা করার অভিযোগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসবিরুলের বিরুদ্ধে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিজেদের মধ্যে অশুভ প্রতিযোগিতা করেই এয়ারলাইন্সগুলো লোকসানের মুখে পড়ে। তাছাড়া ব্যবসা সম্পর্কে ধারণার অভাবও অনেকটা দায়ী, অনেকেই বলছেন, সরকার ভ্যাট-ট্যাক্স কিছুটা ছাড় দিলে এয়ারলাইন্সগুলো টিকে থাকার দৌড়ে এগিয়ে যেতে পারে। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম