এত নিখুঁত অভিযান সম্ভব হলো কিভাবে?
সৈয়দ রশিদ আলম
ভারতের সেনা কমান্ডোরা পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরে জঙ্গি ঘাটিতে অভিযান চালানোর পর প্রশ্ন উঠেছে, এত নিখুত অভিযান বা হামলা সম্ভব হলো কিভাবে? এর উত্তর হচ্ছেÑ প্রতিপক্ষ দেশের নৌঘাটি, বিমানঘাটি, সেনাঘাটি, মিসাইল স্থাপনা বা জঙ্গি স্থাপনায় হামলা চালানোর পূর্বে সামরিক কর্মকর্তারা কর্মসূচি তৈরি করেন। কিভাবে ঝটিকা হামলা চালিয়ে সফল হওয়া যাবে এবং নিজেদের ক্ষয়-ক্ষতি সীমিত রাখা যাবে সে চেষ্টা করা হয়। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করার পূর্বে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা উপগ্রহগুলো আগে থেকেই নিশ্চিত হয়েছিল, লাদেনের অবস্থান, তারপর হেলিকপ্টার যোগে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিন কমান্ডোরা সফল অভিযান চালাতে সক্ষম হয়। আফগানিস্তানে, ইয়েমেনে, পাকিস্তানের পাহাড়ি অঞ্চলে জঙ্গি ঘাটিতে চালকবিহীন গোয়েন্দা বিমানহামলা চালানোর পূর্বে গোয়েন্দা উপগ্রহের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সঠিক তথ্য পেয়ে যায়, এর পরপরই অভিযান শুরু হয়।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইসরাইল ও ভারত গোয়েন্দা উপগ্রহ ব্যবহার করছে। তারপর তারা প্রতিপক্ষের স্থাপনায় হামলা চালাচ্ছে। সঠিক তথ্য ছাড়া যদি হামলা চালানো হয় তাহলে এখানে কোনো সাফল্য আসবে না। সেটা সামরিক কর্মকর্তারা ভালো করেই জানেন। জানেন বলেই তারা গোয়েন্দা উপগ্রহের কাছ থেকে সঠিক তথ্যটা নিয়ে নেন। বর্তমানে গোয়েন্দা উপগ্রহগুলো একইসঙ্গে ছবি তোলার সঙ্গে সঙ্গে ভিডিও করতে সক্ষম। এই ভিডিওগুলো লাইভ টেলিকাস্টের মাধ্যমে সামরিক কর্মকর্তারা পান। তারপর তারা দ্রুতগতিতে অভিযানের প্রস্তুতি নিতে থাকেন।
মাথার অনেক উপর দিয়ে নিরাপদ অবস্থানে থাকার কারণে গোয়েন্দা উপগ্রহকে মিসাইলের সাহায্যে ধ্বংস করা সম্ভব নয়, যে কারণে একাধিক দেশ গোয়েন্দা উপগ্রহ তৈরি করার দিকে মনোযোগ দিচ্ছে, যেমনÑ ইরান, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান। গোয়েন্দা উপগ্রহের সাহায্যে শত্রু পক্ষে যেকোনো গোপন সামরিক স্থাপনার ছবি তুলে নেওয়া সম্ভব। যদিও বর্তমানে গোয়েন্দা উপগ্রহের চোখ ফাঁকি দেওয়ার নানা উপকরণ তৈরি হচ্ছে।
লেখক: কলামিস্ট / সম্পাদনা: আশিক রহমান