যুদ্ধ হলে শুধু দুই রাষ্ট্রই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, আমাদের উপরও তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে
অধ্যাপক এম শাহীদুজ্জামান
সাম্প্রতিক সময়ে ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক বেশ উদ্বেগজনক অবস্থায় রয়েছে। পাল্টাপাল্টি হামলার ফলে এ উদ্বেগ এখন আতঙ্কের দিকে ধাবিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে দুদেশের সম্পর্কেও তার প্রভাব পড়েছে। সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও এ সম্পর্কের প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। ভারত থেকে পাকিস্তানি শিল্পীদের বের করে দেওয়া হচ্ছে, আবার পাকিস্তানে ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে একটা খারাপ পরিবেশের দিকে এগোচ্ছে দুদেশ।
দুদিন আগে ভারত পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ২ জন সেনা সদস্যকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। এর মধ্যে একজন ভারতীয় সেনা সদস্য আটকে রাখার অভিযোগ করেছে ভারত। এর আগে ভারতীয় ১৮ সেনাকে হত্যা করেছিল সন্ত্রাসীরা। দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার মাধ্যমে যুদ্ধের একটা আভাস পাওয়া যাচ্ছে। যুদ্ধ এখনই শুরু হবে তা বলা যাচ্ছে না। কারণ, দুদেশের সামরিক মহড়াই কেবল দেখা গেছে, কিন্তু কোনো বড় রকমের হামলা হয়নি। পাকিস্তানে এখন সেনাবাহিনীদের রণকৌশল পরিবর্তনের সময় আসছে। এ রণকৌশলের মাধ্যমে তাদের উচ্চাকাক্সক্ষা রয়েছে। তাই হয়তো তারা চাইছে কোনো নাটকীয় ঘটনার মাধ্যমে এ অবস্থার অবসান হোক। আমার মনে হয়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ চাইবেন না এ সময় যুদ্ধ হোক। যুদ্ধ হওয়া নির্ভর করে দেশের সেনাবাহিনীদের ওপর পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণ কতটুকু।
ভারত এখনই যুদ্ধে জড়াতে করতে চাইবে বলে মনে হয় না আমার। কারণ, সামরিক দিক থেকে ভারত পাকিস্তান থেকে বেশ পিছিয়ে রয়েছে। পাকিস্তানে বেশকিছু আণবিক অস্ত্র রয়েছে যেগুলো খুব মারাত্মক, যাকে বলা হয় ব্যাটেল ফিল্ড। অল্প দূরত্বে মারাত্মক আঘাত হানতে সক্ষম এমন অনেক অস্ত্র পাকিস্তানে এই মুহূর্তে মজুদ রয়েছে। যুদ্ধ বাধলে ভারতের বেশি ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে আমি মনে করি। দুই দেশের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো চায় যেন যুদ্ধ না হয়। যুদ্ধ হলে শুধু যে দুই রাষ্ট্রেরই ক্ষতি হবে তা নয়, আমাদেরও উপরও তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
পরিচিতি: আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক
মতামত গ্রহণ: শরিফুল ইসলাম
সম্পাদনা: আশিক রহমান