সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ডিমওয়ালা ইলিশ
ফরিদুল মোস্তফা খান, কক্সবাজার : কক্সবাজার বঙ্গোপসাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে বিপুল ইলিশ। ফলে প্রতিদিন সাগর থেকে মাছের ঝাঁপি নিয়ে শতাধিক ট্রলার ভিড়ছে কক্সবাজার শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারিঘাটে। এরমধ্যে গত দুইদিন ধরে প্রায় ৭০ মেট্রিন টন করে ইলিশ রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে। তবে ধরা পড়া ইলিশের মধ্যে অধিকাংশই ডিমওয়ালা মাছ। অথচ সাগরে মাছধরার উপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে আরো ১০ দিন পর, অর্থাৎ ১২ অক্টোবর থেকে।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত প্রায় ২০ দিন ধরে কক্সবাজার বঙ্গোপসাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে বিপুল পরিমাণ ইলিশ। তবে ধরা পড়া ইলিশের মধ্যে শতকরা নব্বই ভাগই ডিমওয়ালা মাছ। অথচ সাগরে মাছধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিনের জন্য।
বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তরের মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে ইলিশ মাছ ডিম ছাড়তে নদী মোহনায় আসবে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে। এ কারণে ওই সময়ে সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্টদের মতে, আরো প্রায় ২০ দিন আগে থেকেই সাগরে ইলিশের প্রজনন মৌসুম শুরু হয়েছে। ইলিশের দল ডিম ছাড়তে এখন ঝাঁকে ঝাঁকে নদী মোহনার দিকে আসছে। এই কারণে কক্সবাজারের উপকূলবর্তী বঙ্গোপসাগরে এখন বেশি পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ছে। বর্তমানে সাগরে ধরা পড়া অধিকাংশ ইলিশই ডিমওয়ালা- একথা স্বীকার করে কক্সবাজার শহরের ফিশারীঘাটস্থ মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী বলেন, গত পক্ষকাল ধরে ধরা পড়া ইলিশের মধ্যে শতকরা ৭০ ভাগই ডিমওয়ালা মাছ।
তবে দরিয়ানগর ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি নজির আলমের মতে, এই হার শতকরা নব্বই ভাগের বেশি হবে। একই তথ্য নিশ্চিত করেন শহরের মৎস্য ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী বাবুল। তার মতে, এখন ধরা পড়া ইলিশের মধ্যে শতকরা নব্বই ভাগের চেয়ে অনেক বেশি ডিমওয়ালা মাছ। কক্সবাজারের সচেতন মহলের মতে, আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২২ দিনের জন্য সাগরে মাছধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও এরআগেই ইলিশের দল ডিম ছেড়ে গভীর সাগরের দিকে চলে যাবে।
অথবা জেলেদের জালে আটকা পড়ে মানুষের উদরে চলে যাবে। ইলিশের দল ডিম ছাড়ার জন্য যখন নদী মোহনার দিকে আসছে, তখন মাছধরা নিষিদ্ধ করা হল না কেন- প্রশ্ন তাদের। এ বিষয়ে দেশের বিশিষ্ট মৎস্য বিজ্ঞানী ড. ম কবির আহমদ বলেন- দেশের মৎস্য সম্পদ রক্ষা এবং প্রাচুর্য বৃদ্ধির জন্য মাছের প্রজনন মৌসুমের সঠিক সময় নির্ধারণ করতে হবে। সঠিক সময় নির্বাচনে ব্যর্থ হলে সরকারের উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়ে যাবে। সম্পাদনা: তারেক