জাফর আহমদ: স্প্রেড নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মানছে না দেশি-বিদেশি ১৭ বাণিজ্যিক ব্যাংক। এসব ব্যাংকের বর্তমান স্প্রেড হার ৫ থেকে সাড়ে ৯ শতাংশ পর্যন্ত। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা আছে স্প্রেড হার ৫ শতাংশের নিচে রাখতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। স্প্রেড নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা না মানার হার সবচেয়ে বেশি বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে। বাংলাদেশে কর্মরত ৯ বিদেশি ব্যাংকের মধ্যে ৫টির স্প্রেড হার ৫ শতাংশের উপরে। এর পরই রয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংক। ৩৯ তফসিলি ব্যাংকের মধ্যে ১৩টি নির্দেশনা মানেনি। আর একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকের স্প্রেড ৫ শতাংশের উপরে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী বিদেশি ৫ ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্প্রেড স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড চার্টার্ড ব্যাংকের। ব্যাংকটির স্প্রেড হার ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার স্প্রেড হার ৬ শতাংশ। সিটি ব্যাংক এনএ-এর ৬ দশমিক ৩২ শতাংশ। কমার্শিয়াল ব্যাংকত অব সিলনের ৫ শতাংশ। এইচএসবিসি ব্যাংকের ৫ দশমিক ৫২ শতাংশ।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেন, স্প্রেড নির্ধারিত সীমার মধ্যে নামিয়ে আনতে আমরা বরাবরই তাগাদা দিয়ে আসছি। কারণ স্প্রেড যত কম হবে তা বিনিয়োগকারীদের জন্য তত ভালো। যে সব ব্যাংক কেন্দীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী স্প্রেডের সীমা মানছেন না তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্যাংকিং খাতে সবচেয়ে বেশি স্প্রেড বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্র্যাক ব্যাংকের। ব্যাংকটির স্প্রেড হলো ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এরপরই রয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের স্প্রেড। ব্যাংকটির স্প্রেড হার ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। এছাড়া এবি ব্যাংকের স্প্রেড ৫ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ; আইএফআইসি ব্যাংকের স্প্রেড ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ; উত্তরা ব্যাংকের ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ; ইস্টার্ন ব্যাংকের ৫ শতাংশ; এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ৫ শতাংশ; সাউথ-বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংকের ৫ দশমিক ২১ শতাংশ; মেঘনা ব্যাংকের ৫ দশমিক ২০ শতাংশ; ট্রাস্ট ব্যাংকের ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ; এনআরবি ব্যাংকের ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ৫ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ স্প্রেড।
স্প্রেড হারের ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা পরিপালনে আরও খানিক সময় প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও গবেষক জায়েদ বখত। তিনি বলেন, স্প্রেড কমানো নির্ভর করে আমানত গ্রহণ ও ঋণ বিতরণের সুদের হারের উপর। এছাড়া ভালো ও খারাপ গ্রাহকের ব্যাপার আছে। একটি ব্যাংকের খারাপ গ্রাহক ঋণ নিয়ে ফেরত দেয় না। ভালো গ্রাহকের ক্ষেত্রে সুদ হার কমানো যায়। কিন্তু খারাপ গ্রাহকের ক্ষেত্রে এটা করা সম্ভব হয় না। এর প্রভাব পড়ে পুরো সুদ হারের উপর।