হাসান আরিফ: শুল্ক জটিলতায় বেনাপোল বন্দরে আটকে আছে কয়েক হাজার মেট্রিক টন প্রাকৃতিক পাথর আর ও মার্বেল। বন্দর থেকে পণ্য খালাস না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের প্রতিদিন পোর্ট ডেমারেজ এবং শিপিং লাইনের অতিরিক্ত কন্টেইনার ভাড়া দিতে হচ্ছে। পাশাপাশি রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। ফলে বিষয়টি দ্রুত সমাধান চেয়ে এনবিআর চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ব্যবসায়ীরা।
গত তিন মাস ধরে কোনো মাল খালাস হচ্ছে না বেনাপোল বন্দর থেকে। পাশাাপাশি ব্যবসায়ীরা নতুন করে আমদানিও করছে না। এ বিষয়ে যুগ্ম কমিশনার বলেন, নিয়ম অনুসারেই আমরা পণ্য খালাস করছি। প্রশাসনিক বিষয়ে কোনো সমস্যা নেই। পদ্ধতিগত কিছু সমস্যা রয়েছে তাও ঠিক হয়ে যাবে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বরে এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে অবহিত করে চিঠি পাঠিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। চিঠিতে বলা হয়েছে, ভারত থেকে আমদানি করা প্রাকৃতিক সেøট পাথর এসএজি কর্তৃক পরীক্ষা করে প্রাকৃতিক পাথর নিশ্চিত হওয়ার পরও মাল খালাস করতে পারছি না। এসএজি প্রতিবেদন অনুসারে শুল্কায়ন গ্রুপ থেকে পণ্য চালানটি এইসএস কোড ৬৮০৩.০০.০০ শুল্কায়ন প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য যুগ্ম কমিশনার কাছে গেলে তিনি নতুন করে এইসএস কোড নির্ধারণের জন্য বলেন। কিন্তু আমদানি করা পণ্যর নমুনা বুয়েট থেকে পরীক্ষা করে এইসএস কোড ৬৮০৩.০০.০০ নির্ধারণের অনুমোদন দেয়। এরপর বন্দর থেকে এইসএস কোড ৬৮০৩.০০.০০ এর পরিবর্তে ৬৮০২.৯৯.০০ তে শুল্কায়নের প্রস্তাব দেন। ফলে আটকে যায় পণ্য।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এইসএস কোড ৬৮০৩.০০.০০-তেই পণ্য খালাস করা হচ্ছে। হঠাৎ করে কোড পরিবর্তন করায় শুল্ক ৩৭ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১৫২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। পাশাপাশি মার্বেল ও পাথরের মধ্যে পার্থক্য থাকছে না। বিষয়টি বুয়েট থেকে অ্যাসেসমেন্ট করে অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। বুয়েট এইসএস কোড ৬৮০৩.০০.০০ নির্ধারণের অনুমোদন দেয়। এছাড়া আগে প্রতি মেট্রিক টন ন্যূনতম মূল্য ৮০ থেকে ১৩০ ডলারের মধ্যে ছিল। বর্তমানে তা ৩০০ ডলারে উন্নীত করা হয়েছে। অন্যদিকে মার্বেলের ক্ষেত্রে ৩০০ থেকে ৩৫০ ডলারের মধ্যে ছিল। যা বর্তমানে এক হাজার ডলার করা হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা মূল্য কমানোর জন্য এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেছেন। সে আবেদনটি বিবেচনাধীন রয়েছে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে। ফলে মূল্য নির্ধারণ জটিলতার পাশাপাশি নতুন করে এইসএস কোড নিয়ে আরেক জটিলতার তৈরি হয়েছে। এতে তিন মাস ধরে কোনো পণ্য খালাস হচ্ছে না। ফলে বন্দরে খোলা মাঠে পণ্যগুলো রোদ, বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক ঋণ বৃদ্ধি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পণ্যের সংকট তৈরি হয়েছে। আগে প্রাকৃতিক পাথর ৩৭ শতাংশ হারে শুল্ক দিয়ে খালাস করলেও ৬৮.০২ কোডে ১৫২ শতাংশ করা হয়েছে। এতে মার্বেল ও প্রাকৃতিক পাথরের শুল্ক সমান হয়ে গেছে। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম