রিকু আমির : চলতি বছর (সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) ৪ হাজার ৫৮জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর তথ্য পেয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। ১৭ বছরের মধ্যে এই সংখ্যা তৃতীয় সর্বোচ্চ হলেও গত ১৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
প্রতিষ্ঠানটি থেকে পাওয়া পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সর্বোচ্চ সংখ্যক ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয় ২০০০ সালে, পাঁচ হাজার ৫৫১। ওই সময় মৃতের সংখ্যাও ছিল সবচেয়ে বেশি, ৯৩জন। দ্বিতীয়বারের মতো সর্বোচ্চ আক্রান্ত হয় ২০০২ সালে, ছয় হাজার ১৩২জন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুও ঘটে একই বছর, ৫৮ জন। আর চলতি বছর এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজার ৫৮জন, মৃত্যু হয়েছে নয়জনের।
গতকাল সোমবার সকালে আইইডিসিআরের সম্মেলন কক্ষে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাস সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিতকরণ সভায় এসব তথ্য উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ড. মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা। এতে অন্যদের মধ্যে আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. সেলিমুজ্জামান, ভাইরোলজিস্ট এএসএম আলমগীর, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ ডা. হাসান আমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে ড. মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা জানান, ডেঙ্গুজ্বরের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা উন্নত, সহজপ্রাপ্য হওয়ায় মৃতের সংখ্যা অনেক কমেছে। আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়ে পরিচালক জানান, একসময় ডেঙ্গু শনাক্তের ব্যবস্থা ছিল খুবই কম, মানুষ এ সম্পর্কে বর্তমানের মতো সচেতন ছিল না। দেখা যেত, কেউ কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন বা এতে আক্রান্ত হয়ে মারাও গেছেন। কিন্তু সেটা অজ্ঞাত থাকত। এখন পরিস্থিতি বদলেছে, সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোসহ বিভিন্ন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডেঙ্গু শনাক্তের ব্যবস্থা আছে। একইসঙ্গে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে, সার্ভিল্যান্স সিস্টেম জোরদার করা হয়েছে। এসব কারণে শনাক্ত ও লিপিবদ্ধের সংখ্যা বেড়েছে। এজন্য দেখা যাচ্ছে, আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধের বিষয়ে অনুষ্ঠানে বলা হয়েছে, এজন্য মশক নিয়ন্ত্রণ, সচেতনতা বৃদ্ধি খুবই জরুরি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. সেলিমুজ্জামান জানান, মশা নিয়ন্ত্রণে খুব শিগগিরই আইইডিসিআর ঢাকা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। ‘তবে এডিস মশার জন্ম ঘরের ভেতর জমে থাকা পানিতে হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের ইচ্ছে থাকলেও ঘরে ঘরে প্রবেশ করে মশার বংশবৃদ্ধি রোধ বা নির্মূল করতে পারে না। বেশিরভাগ মানুষ চাইবে না, তার বসতবাড়িতে সিটি করপোরেশনের লোকজন প্রবেশ করে মশা মারুক। এজন্য ঘরে ঘরে সচেতনতা বৃদ্ধি করা সবচেয়ে জরুরি’- বলেন ডা. সেলিমুজ্জামান। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম