হাসান আরিফ: বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কৃষির আধুনিকায়ন, মাটির গুণাগুণ পরীক্ষা, গবেষণা, উৎপাদিত কৃষিপণ্য যথাযথ সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাত করণ জরুরি। সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়া করণের অভাবে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ কৃষি পণ্য নষ্ট হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে এফএও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। এ ধরনের সহযোগিতা এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্যও প্রয়োজন।
ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘে খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) হেডকোয়ার্টার্সে মিনিস্টিরিয়াল মিটিং-এর ‘লং-টার্ম কমোডিটি প্রাইজ ট্রেন্ডস এন্ড সাসটেইনেবল এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট’ সেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সভাপতির ভাষণে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ১৯৭১ সালে। সে সময় দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের খাদ্যের অভাব ছিল। আজ বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের খাদ্যের অভাব নেই। বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, প্রয়োজনের তুলনার অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদিত হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বাংলাদেশ এখন খাদ্য রপ্তানি করছে। খাদ্য রপ্তানিকারক দেশের তালিকায় এখন বাংলাদেশ।
সম্মেলনে তোফায়েল আহমেদ বলেন, কৃষি অর্থনীতি নির্ভর বাংলাদেশে ৪০ ভাগ মানুষ কাজ করছে এ সেক্টরে। স্বাধীনতার পর জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ছিল ৭৮ ভাগ, বর্তমানে এ অবদান ১৪ দশমিক ৯৫ ভাগ। বাংলাদেশের উন্নয়নে ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে এসডিজি’র ৮২ ভাগ অর্জন করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশের বর্তমান ইকনোমিক গ্রোথ ৭ দশমিক ১ ভাগ, এর মধ্যে রপ্তানি খাতে প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৭৭ ভাগ। সেখানে বিশ^ অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৩ ভাগ।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ^ব্যাংকের হিসাব মোতাবেক বাংলাদেশ ইতোমধ্যে নিম্নœমধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বর্তমান রপ্তানি ৩৪ দশমিক ২৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১ সালে দেশের ৫০ বছর পূর্তিতে এ রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়াবে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, এর মধ্যে শুধু তৈরি পোশাক থেকে আসবে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমানে তৈরি পোশাক কারখানাগুলো কম্পøায়েন্স করা হয়েছে। এতে বিপুল পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়েছে, কিন্তু তৈরি পোশাকের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়নি। পণ্যের ও শ্রমের উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত না হলে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা উৎসাহ হারিয়ে ফেলতে পারে। এসডিজি অর্জনের ক্ষেত্রে পণ্যের উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত হওয়া জরুরি। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম