আজাদ হোসেন সুমন: দীর্ঘদিন কাস্টডিতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের পরও গুলশানের জঙ্গিহামলায় হাসনাত করিম জড়িত কিনাÑ এ বিষয়ে পুলিশের সংশয় কাটেনি এখনো। তাকে টিএফআই ইন্টারোগেশন সেলে (টিআইএস) সমন্বিতভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। টিএফআই সেলে প্রতিবেদন পাওয়া পর নিশ্চিত হওয়ার কথা বলছে পুলিশ। অন্যদিকে পলাতক জঙ্গি মাস্টারমাইন্ড মারজান, জাহাঙ্গীর ওরফে রাজীব এবং চকলেট ওরফে বাশারুজ্জামানকে গ্রেফতার করতে পারলে এ ঘটনার পুরো রহস্য উন্মোচিত হবে। জানা গেছে, গুলশান হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গিহামলার সময় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিমকে জঙ্গিদের সাথে কথা বলতে দেখা গেছে। অবশ্য ঘটনার দিন জঙ্গিরা রাত পৌনে ৯টার দিকে রেস্তোরাঁয় ঢুকে সবাইকে জিম্মি করলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসনাত করিম তার চাচা আনোয়ারুল করিমকে ফোন করে জিম্মি হওয়ার কথা জানান। কিন্তু রাত ১১টার পর হাসনাত করিমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন আনোয়ারুল করিম। পরদিন একটি ভিডিও ফুটেজে সিগারেট ফুকতে ফুকতে জঙ্গিদের সাথে হাসনাত করিমকে কথা বলতে দেখা যায়। তার চালচলন ও বডিল্যাংগুয়েজ ছিল সন্দেহজনক। এছাড়াও তার প্রিভিয়াস ক্যারিয়ার বিশ্লেষণ করে সন্দেহজনক তথ্য-উপাত্ত পায় তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্তসংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেছেন, জঙ্গিদের মধ্যে একজনের সাথে হাসনাত করিমের পূর্ব পরিচয় ছিলÑ এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। ঘটনার পরিকল্পনা বা হামলার সাথে তিনি জড়িত কিনা সেটা নিশ্চিত করে এখনই বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে মামলার গতি কখন কোনদিকে মোড় নেয় সে বিষয়ে আগাম কিছু বলা মুশকিল। কারণ একেকজন গ্রেফতার হচ্ছে আর নতুন নতুন তথ্য সংযোজন হচ্ছে। পরিকল্পনা, হামলার অর্থ ও অস্ত্রের উৎস, মাস্টারমাইন্ড সবই এখন তদন্তকারীদের নখদর্পণে। মারজান আর বাশারুজ্জামান ধরা পড়লেই এ মামলার তদন্তে শতভাগ সফলতা আসবে বলে মনে করছে তদন্তকারীরা।
সূত্র জানায়, নিশ্চিত নয় মানে এই নয় যে, গুলশানে জঙ্গিহামলার ঘটনায় হাসনাত করিম জড়িত নয়Ñ সেটা নিয়ে এখনো সন্দেহের দোলাচলে রয়েছে পুলিশ। নতুন কোনো তথ্য বা সাক্ষ্যে হাসনাত করিমের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাকে পুনরায় পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম