শিশুর জন্য বৈষম্য থাকবে না : প্রধানমন্ত্রী
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বেড়ে উঠার পথে শিশুদের যাতে বৈষম্যের শিকার হতে না হয়, সেভাবেই সমাজকে গড়ে তুলতে হবে।
গতকাল সোমবার বিশ্ব শিশুদিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহের উদ্বোধনের সময় একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রতিটি শিশুর জন্য খাবার নিশ্চিত করার উপরও গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ ব্যাপারে বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র হয়ে কেউ জন্মায় না, এটা তার ভাগ্য। একটা দরিদ্র পরিবারে জন্ম বলেই সে দরিদ্র। কিন্তু ওই শিশুটি ধনীর ঘরে জন্মালে সেওতো ধনীই হত, কাজেই এই ব্যবধানটা যেন শিশুদের মাঝে কোনোমতেই না দেখা দেয়। এই বিষয় ছোট্টবেলা থেকেই শিশুদের শেখানো দরকার।
তিনি বলেন, একটি শিশু, পবিত্র শিশু। সে যেখানেই থাকুক, সমাজে তার সমান অধিকার রয়েছে। কাজেই এই অধিকার যেন সে নিশ্চিতভাবে পায় তা সবাই দেখবেন, এটাই আমি আশা করি। আমরা প্রত্যেক মানুষেরই খাদ্যের নিশ্চয়তা দিতে চাই। কাজেই আমাদের দেশে একটি শিশুও যেন না খেয়ে কষ্ট না পায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৬ কোটি মানুষের খাবার আমরা নিশ্চিত করছি সেখানে আমার শিশুরা কেন না খেতে পেয়ে কষ্ট পাবে?
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা প্রদান করেন- বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)’র কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ এডুয়ার্ড বেইগবেডার এবং মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম।
কোমলমতি শিশুদের পক্ষে শিশু বিকাশ কেন্দ্র গাজীপুর এবং আজিমপুরের দুই শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার মীম ও মুজিবুর রহমানও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শিশুরা জাতি গঠনের মূল ভিত্তি, তারাই আগামীর ভবিষ্যৎ। সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিবে আজকের শিশুরা। বিশ্ব পরিচালনায় নেতৃত্ব দেবে। তাই শিশুদের যোগ্য করে গড়ে তোলা, পারিবারিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সমান অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বৈষম্যহীন শিশুবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।
তিনি বলেন, শিশুদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হচ্ছে, ঝরেপড়া রোধ করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। চালু করা হয়েছে মিড ডে মিল। ধীরে ধীরে সব বই ই-বুক করে দেওয়া হবে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম করে দেওয়া হচ্ছে। পাহাড়ি ও দুর্গম এলাকায় আবাসিক স্কুল করে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চা বাড়াতেও সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেক উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম করে দেওয়া হচ্ছে; স্কুল থেকে নেতৃত্ব বিকাশের সুযোগ করে দিতে প্রতি স্কুলে স্টুডেন্ট কাউন্সিল গঠনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্পাদনা : রিকু আমির