মাউশির পরিচালককে আধা ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
মাসুদ আলম: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়টির ইনস্টিটিউটের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে রাজধানীর নীলক্ষেতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পরে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা। এর আগে সকালে কলেজে ‘বিপন্ন উদ্ভিদ সংরক্ষণে শিক্ষাঙ্গনের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ওহিদুজ্জামানকে অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। আধাঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ তালা ভেঙে তাকে উদ্ধার করেন। শিক্ষার্থীরা কলেজের প্রধান ফটকেও তালা দেয়। শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে আজও সড়ক অবরোধ করবে বলে ঘোষণা দেয়।
অবরোধের ফলে মিরপুর রুট, আজিমপুর, নিলক্ষেত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাশের রাস্তার সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ওই এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, অনেক দিন ধরেই তারা গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউটের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করছেন। এর আগেও একাধিকবার ইনস্টিটিউট করার দাবিতে আন্দোলন হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের জানায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ইনস্টিটিউটের আওতায় আনতে হলে সহশিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে হবে। পরে গত ২১ সেপ্টেম্বর কলেজটিতে সহশিক্ষা কার্যক্রম চালুর দাবিতে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি দিয়েছিলেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, স্মারকলিপি দেওয়ার সময় তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়া হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই তারা রাস্তায় নেমেছেন। শিক্ষামন্ত্রী ঢাকা কলেজের একটি অনুষ্ঠানে আছেন জানতে পেরে ছাত্রীরা মাউশির পরিচালকে অবরুদ্ধ করে। যাতে শিক্ষার্থীদের দাবি শিক্ষামন্ত্রী কলেজে এসে তাদের দাবির বিষয়ে আশ্বাস দেবেন। কিন্তু তিনি আসেননি। তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি পালন চালিয়ে যাবে।
ওইসময় শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক ওহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমি তোমাদের দাবির বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে অবহিত করব। শিক্ষামন্ত্রণালয় যদি চায় তাহলে আমার কোনো সমস্যা নেই। আমি তো দাবি পূরণ করার কেউ না।
বিশৃঙ্খলা করে দাবি আদায় করা যাবে না। তোমরা আন্দোলন করো না। আমি জানলাম, বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে জানাব। কিন্তু রাস্তা বন্ধ করে, ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনের কোনো মানে হয়না।
এ বিষয়ে লালবাগ থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, বিকালের দিকে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেয়। কলেজের অধ্যক্ষসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের বুঝানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু তারা কারও কথা শুনেনি।
এ বিষয়ে পুলিশের নিউমার্কেট জোনের (ট্রাফিক) সহকারী কমিশনার (এসি) আনিচ উদ্দিন জানান, সন্ধ্যার আগ মূহুর্তে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেয়। তাদের বিভিন্নভাবে বুঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। যানজট নিরসনে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করা হয়েছে। যাতে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে না হয়। যানজট নিরসনে সোচ্চার ছিল ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা।