সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের ভিডিওটি পাকিস্তানকেও সরবরাহের দাবি
ইমরুল শাহেদ : দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের দল আম আদমি পার্টি দাবি করেছে, পাকিস্তান সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের সারজিক্যাল স্ট্রাইকের ভিডিও ফুটেজ শুধু প্রকাশ্যে আনাই নয়, পাকিস্তানকেও তার একটি কপি সরবরাহ করা হোক। কারণ ভারতের সারজিক্যাল স্ট্রাইকের বিষয়টি তারা বারবারই অস্বীকার করে যাচ্ছে। কিন্তু সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হওয়ার পর প্রথমে পাকিস্তান সরকার ভারতের সমালোচনা করে। পরে তেমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি বলে দাবি করে তারা।
কেজরি বলেন, গোটাটাই ভারত সরকারের কল্পনা বলে বিবৃতি দেয় পাকিস্তান। তাতে ভারতের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর এ অভিযান নিয়ে সন্দেহ ও বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা দেয়। তারা প্রমাণ দেখতে চায়, ভারতীয় সেনাবাহিনী সীমান্ত অতিক্রম করে আদৌ এ ধরনের কোনো অভিযান পরিচালনা করেছে কিনা। বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, এ উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী বুধবারই কেন্দ্রীয় সরকারকে ২৯ সেপ্টেম্বর পরিচালিত সেনা অভিযানের ভিডিও ফুটেজ হস্তান্তর করেছে।
ইকোনোমিক টাইমস জানিয়েছে, অভিযানের প্রামাণ্য এ ভিডিওটি প্রকাশ্যে আনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে সবুজ সংকেতও দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে পাকিস্তানের অস্বীকৃতি ও ভারতের বেশকিছু রাজনীতিবিদের সন্দেহ প্রকাশের প্রেক্ষিতে প্রামাণ্য ভিডিও প্রকাশে সম্মতি দিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। এবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দফতর। গোটা অপারেশনের ভিডিও দেখানো হবে কিনা তাও নির্ভর করছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের উপর।
পক্ষান্তরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, এ ব্যাপারে কথা বলার এখতিয়ার কেবল সেনাবাহিনীরই আছে। ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী তার মন্ত্রীদের এ ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এ ব্যাপারে যা বলার সেনা কর্মকর্তারাই বলবেন। ভিডিওটি হাতে পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্যাবিনেট কমিটির সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেন। এ ইস্যুটিকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভিডিওটি প্রকাশ্যে আনা যুক্তিযুক্ত হবে কিনা তা তিনি বিস্তারিত আলোচনা করেন। কিন্তু আলোচনার ফলাফল কি তা নিয়ে কারও সঙ্গে কোনো মত বিনিময় বা ইঙ্গিতও করেননি। ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, আলোচনায় বেশি উঠে এসেছে পরিস্থিতির সর্বশেষ অবস্থা।
সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে পাকিস্তানের বারবার অস্বীকৃতির কারণে এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও সন্দেহ দেখা দেওয়ার অবকাশ সৃষ্টি হয়। তাই ভারত সরকারের তরফে ২৪টি দেশকে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের বিষয়টি সরকারিভাবে জানানো হয়। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীসহ দেশটির অন্য রাজনৈতিক দলগুলির শীর্ষ নেতাদেরও সেই তথ্য দেওয়া হয়। প্রথমদিকে এ অভিযান নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশে থাকলেও পরের দিকে কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি (আপ)-সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর তরফে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে এ ঘটনার সত্যতা তুলে ধরার জন্য দাবি জানানো হয়।
সূত্রের খবর, দেড় ঘণ্টার এ ভিডিও-তে পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরে ঢুকে জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংসের ছবি রয়েছে। সেনা সূত্রের খবর, সেনা অভিযানের প্রচার প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে। স্থলসেনার পাশাপাশি আলাদা করে আনম্যানড এরিয়াল ভেহিকলস (ইউএভি)-এর মাধ্যমেও সেনা অভিযানের সেই ছবি তুলে রাখা হয়েছে। সরকারের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কোনো সন্দেহ নেই যে, সেনা অভিযানে বিপক্ষের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। আমাদের কাছে যেসব তথ্য-প্রমাণ রয়েছে তাতে পরিষ্কার যে, সেনার প্রশিক্ষিত জওয়ানরা নির্দিষ্ট লক্ষ্যেই হামলা চালিয়েছিল। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি